খবর৭১ঃ
রাজধানীর বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়ছে। ফলে দাম ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। কোরবানির ঈদের পর অন্যসব মাছের দাম চড়া। এ অবস্থায় ইলিশের দাম কমায় ভোক্তাদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। বিক্রেতারা বলছেন, এবার উপকূলে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।
সরেজমিন শনিবার সকালে মাছের পাইকারি আড়ত সোয়ারীঘাট গিয়ে দেখা গেছে, পাইকার ও আড়তদাররা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ইলিশ হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন। প্রতিটি আড়তে খুচরা বিক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দর কষাকষি করে এসব ইলিশ কিনছেন রাজধানীসহ আশপাশ থেকে আসা খুচরা বিক্রেতারা।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি হালি (এক কেজি) ইলিশ পাইকারি দরে ৩৪০০-৩৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে- যা গত সপ্তাহে ৪০০০-৪২০০ টাকায় বিক্রি হয়। ৮০০ গ্রামের এক হালি ২২০০-২৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে- যা গত সপ্তাহে ২৬০০-২৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আর ৬০০-৭০০ গ্রামের প্রতি হালি পাইকারি দরে ১৬০০-১৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে- যা গত সপ্তাহে ২০০০ টাকায় বিক্রি হয়। এখানকার পাইকারি মাছ বিক্রেতা মো. আল-আমিল বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ বেশি। তাই দাম কমতে শুরু করেছে। আর এমন অবস্থা থাকলে দাম আরও কমবে। সোয়ারীঘাটে মাছ কিনতে আসা নয়াবাজারের খুচরা মাছ বিক্রেতা মো. জুয়েল বলেন, পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় ইলিশ অনেক বেশি। এ কারণে দাম কমছে।
আর আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারব। অন্যদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার ও মালিবাগে মাছের খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত মাসের তুলনায় বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। দাম কম হওয়ায় সাধারণ ভোক্তাদের ইলিশের প্রতি ঝোঁক বেশি দেখা গেছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিনের তুলনায় শনিবার ইলিশের দাম কম। সরবরাহও প্রচুর। এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গত সপ্তাহে ছিল ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০০ টাকায়- যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০০ টাকা। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে- যা আগে ছিল ৬০০ টাকা।
৪০০ গ্রাম ও তার চেয়ে কম ওজনের ইলিশের কেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. জসিম যুগান্তরকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে আসা ইলিশের দাম কম। কিন্তু বরিশাল ও চাঁদপুর থেকে আসা ইলিশের দাম অনেক বেশি। তিনি বলেন, অনেকে দাম কম দেখে অতিরিক্ত মাছ কিনে মজুদ করেন। ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হলে বেশি দামে বিক্রি করবে। ইলিশের দাম কম থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। কারওয়ান বাজারে মাছ কিনতে আসা হাকিম বলেন, বাজারে ইলিশের সরবরাহ একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। দামও কিছুটা কম।
তাই তিন হালি নিয়ে যাচ্ছি। তবে সরবরাহ অনুযায়ী দাম আরও কম হওয়ার কথা ছিল। দেখা যাচ্ছে বিক্রেতারা একজোট হয়ে মাছ বিক্রি করছেন। সবাই এক দামে মাছ বিক্রি করছে।
মালিবাগ কাঁচাবাজারে মাছ কিনতে আসা লাবণী আক্তার বলেন, বাজারে যেভাবে ইলিশ উঠেছে তা দেখতেই ভালো লাগছে। নির্ধারিত সময়ে জেলেরা ইলিশ না ধরলে বাজারে ইলিশের অভাব হবে না। আর আমরাও একটু কম মূল্যে ভালো মাছ কিনতে পারব।
তিনি বলেন, এখন নিম্নবিত্ত মানুষও ইলিশ কিনছেন। অথচ আগে মধ্যবিত্তের জন্যও ইলিশ কেনা দায় হতো।