খবর ৭১: চিকনগুনিয়া কোনো নতুন রোগ নয়। ১৯৫২ সালে তানজানিয়াতে রোগটি প্রথম ধরা পরে। ২০০৮ সালের দিকে বাংলাদেশের রাজশাহী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রথম এ রোগের ভাইরাসটি ধরা পরে। পরবর্তীতে ২০১১ সালে ঢাকার দোহারে এটি লক্ষ্য করা গেলেও এরপর তেমনভাবে চিকনগুনিয়া ভাইরাসের কথা শোনা যায়নি। তবে ২০১৭ সালের প্রথমদিকে থেকে সারাদেশে চিকনগুনিয়া রোগটি উল্লেখযোগ্য হারে লক্ষ করা যায়।
চিকনগুনিয়া ভাইরাসটি মশার কামড়ের মাধ্যমে মানব শরীরে প্রবেশ করে। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে আকস্মিক উচ্চমাত্রার জ্বর, জয়েন্টে ব্যথা ও ফুসকুড়ি (rash) দিয়ে উপসর্গ শুরু হয়। এছাড়া অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, পেটব্যথা, ফটোফোবিয়া বা আলোর দিকে তাকাতে সমস্যা, কনজাংটিভাইটিস এবং বড়দের আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টে প্রদাহ হতে পারে।
চিকনগুনিয়ার রোগী সাত দিনের মধ্যে ভাল অনুভব করতে থাকে। এ রোগে সাধারণত কারো মৃত্যু হয় না। মৃত্যু ঝুঁকি প্রতি দশ হাজারে এক জন বা এর চেয়েও কম। তবে বয়স্ক (৬৫ বছর) ও নবজাতদের ক্ষেত্রে এই রোগের জটিলতা তুলনামূলক বেশি হয়। একবার এ রোগ হলে, ভবিষ্যতে সাধারণত আর হয় না।
এখন পর্যন্ত এই রোগের কোন প্রতিষেধক (vaccine) বা চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি। চিকনগুনিয়ার রোগীকে প্রচুর বিশ্রাম, পানি ও তরল খাবার গ্রহণ এবং জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায় হলো মশা নিয়ন্ত্রণ ও ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো, লম্বা হাতলযুক্ত জামা ও ট্রাউজার পরে থাকা, বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে না দেয়া এবং যেসব এলাকায় এ রোগের ঘটনা সাধারণত ঘটেছে সেসব স্থান পরিত্যাগ করা। পানি আছে এমন স্থানে মশা কমানো এবং পোকামাকড় প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে এর প্রাদুর্ভাব কমানো যেতে পারে।
লেখক: নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির সিনিয়র সাইন্টিষ্ট ড. জাহিদ দেওয়ান শামীম।