খবর৭১ঃ সাতটি রাজ্যে নিষিদ্ধের পর এবার পুরো মালয়েশিয়ায় আলোচিত ভারতীয় ধর্মপ্রচারক ডা. জাকির নায়েকের বক্তৃতায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দেশটির পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন থেকে জাকির নায়েক আর মালয়েশিয়ায় বক্তৃতা দিতে পারবেন না। মালয় মেইলের খবরে বলা হয়, সোমবার মালয়েশীয় পুলিশ সাম্প্রদায়িক স্পর্শকাতর মন্তব্যের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
রয়েল মালয়েশিয়ার পুলিশের করর্পোরেট যোগাযোগ প্রধান সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার আসমাওতি আহমাদ জাকির নায়েকের বক্তৃতায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সব পুলিশ স্টেশনে এমন একটি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা ও সাম্প্রদায়িক ঐক্য বজায় রাখতেই এমন নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান আসমাওমি আহমাদ। এর আগে মালয়েশিয়ার সাতটি রাজ্যে ডা. জাকির নায়েককে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এগুলো হলো মেলাকা, জোহর, সেলানগর, পেনাং, কেদাহ, পেরলিন এবং সারাওয়াক।
এদিকে সাম্প্রদায়িক স্পর্শকাতর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন আলোচিত ধর্মপ্রচারক জাকির নায়েক।সোমবার পুলিশ জাকির নায়েককে ১০ ঘণ্টা জেরা করার একদিন পর তিনি এই দুঃখপ্রকাশ করেন। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জাকির নায়েক বলেন, কখনোই কোনো ব্যক্তি কিংবা সম্প্রদায়কে হতাশ করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। কারণ এটা ইসলামের মূলনীতির বাইরে। কাজেই এই ভুল বোঝাবুঝির জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার হিন্দু সম্প্রদায় নিয়ে এক মন্তব্য নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন জাকির নায়েক। জাকির নায়েকের মন্তব্যটি ছিল-‘ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের চেয়ে মালয়েশিয়ার সংখ্যালঘু হিন্দুরা ১০০ গুণ বেশি অধিকার ভোগ করে’। চলতি মাসের শুরুতে করা ওই মন্তব্যের জন্য সোমবার তাকে ১০ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মালয়েশিয়ার পুলিশ।
জাকির নায়েক মালয়েশিয়ার স্থায়ী নাগরিক হলেও বেশ কয়েকজন মন্ত্রী তাকে দেশটি থেকে বহিষ্কার দাবি করেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, জাকির নায়েক মুক্তভাবে ইসলাম প্রচার করতে পারবেন। কিন্তু সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিয়ে তার কোনো মন্তব্য করা উচিত হবে না। জাকির নায়েকের উদ্দেশে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, আপনি যদি কোনো ধর্মীয় বিষয়ে কথা বলতে চান তবে আপনাকে স্বাগত। এতে আপনাকে অনুমতি দেব। আর কাউকে আমরা থামাবো না।কিন্তু তিনি (জাকির) মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছে। এটা খারাপ।
জাকির নায়েক সালাফী ও আহলে হাদিস মতবাদ প্রচার করেন বলে উপমহাদেশের মূলধারার আলেমগন তাকে বিভিন্নসময় সতর্ক করেছেন। যদিও সৌদি সরকার ২০১৫ সালে জাকির নায়েককে ‘ইসলামের সেবক’ বিবেচনা করে ‘বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার’ দিয়েছিল। জাকির নায়েক ভারতীয় নাগরিক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত এবং জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন। তিনি কয়েক বছর ধরে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। মালয়েশিয়ায় তিন বছর ধরে থাকছেন তিনি।