শিডিউল বিপর্যয়ঃ ৬-১২ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে ট্রেন

0
430
শিডিউল বিপর্যয়ঃ ৬-১২ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে ট্রেন

খবর৭১ঃ
ঈদ এলেই ট্রেন, বাসের আগাম টিকিট পেতে রীতিমতো দৌড়ঝাঁপ করতে হয়। তবে ঈদে এটা ঘরে ফেরা মানুষের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। এরপরও কাঙ্ক্ষিত দিনের টিকিট নিয়ে বাসে বা ট্রেনে চড়তে গিয়ে কম বেশি কষ্ট সইতে হয়। আর এসব সঙ্গী করেই প্রিয়জনদের সাথে মিলিত হয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে ঘরে ফেরা মানুষ। কিন্তু এবারে ট্রেন যাত্রায় চরম বিড়ম্বনায় পড়েন যাত্রীরা।

বিশেষ করে উত্তর-দক্ষিণ জনপদের যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে হয়েছে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে। কোনো কোনো ট্রেন ছেড়েছে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা দেরিতে। আবার কোনো কোনোটি ছেড়েছে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা দেরিতে। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামগামী ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে গেছে। কোনো ট্রেনেই ছিল না তিল ধারণের জায়গা। ট্রেনের ভেতরে, ছাদে ছিল একই অবস্থা। প্রতিযোগিতা করে ট্রেনে উঠতে গিয়ে আহতও হয়েছেন কেউ কেউ।

এদিকে, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ বলেছেন, যাত্রীরা চাইলে অগ্রিম টিকিটের টাকা ফেরত নিতে পারবেন। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশনে টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা নিয়েছেন এমন সংখ্যা ছিল খুবই কম- এ কথা জানিয়েছেন কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার আমিনুল হক জুয়েল।

অন্যদিকে, তীব্র যানজটের কারণে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলগামী বাসগুলোও শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে। নির্ধারিত সময় বাস টার্মিনালে না পৌঁছানোর কারণে সেগুলো নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে যায়। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে গতকাল শনিবার দিনভর ছিল ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই সেতু দিয়ে গতকাল রেকর্ড সংখ্যক যানবাহন অতিক্রম করেছে। শিমুলিয়া ঘাটে ছিল পাঁচ শতাধিক গাড়ির জট। একই ভাবে যানজট ছিল পাটুরিয়া ঘাটেও। সদর ঘাটে পৌঁছাতেই যাত্রীদের নাভিশ্বাস ওঠে। তবে লঞ্চে উঠতে তেমন বেগ পেতে হয়নি। সুখবর আছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গতকাল কোনো যানজট হয়নি।

উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলে চলাচলকারী ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় সম্পর্কে রেলপথ সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ট্রেনের টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে এবার রেল কর্তৃপক্ষকে তেমন ঝামেলা পোহাতে হয়নি। চারটি কারণে শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। প্রথমত, বঙ্গবন্ধু সেতু অতিক্রম করতে ট্রেনগুলোর বেশি সময় লাগছে। দ্বিতীয়ত, বন্যার কারণে বেশ কিছু এলাকায় রেললাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে ঐসব এলাকায় ট্রেনের গতি কমিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তৃতীয়ত, অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে ট্রেনগুলোকে গতি কমিয়ে চলতে হচ্ছে। চতুর্থত, স্টেশনে যাত্রী ওঠানামায় সময় লাগছে। আর এ কারণে শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে।

রেলপথ সচিব আরো বলেন, শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে যারা যাত্রা বাতিল করতে চান, তারা কমলাপুর স্টেশনে টিকিট ফেরত দিতে পারবেন। সে ব্যাপারে স্টেশনে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রেলপথ সচিব বলেন, রবিবার শিডিউল বিপর্যয় অনেকটা গুছিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। রেল সচিবের এমন ঘোষণার পর কমলাপুর রেল স্টেশনের ১-৬ নম্বর কাউন্টারে অগ্রিম টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। এজন্য স্টেশনে মাইকিং করাও হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here