খবর৭১ঃ
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. আল মামুনের আদালতে এ মামলার ৩১২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহান। এর মধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত তিনজন এবং এজাহারের বাইরের ছয়জন আসামি আছেন।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চলন্ত বাসে নার্স শাহিনুর আক্তার ওরফে তানিয়াকে (২৫) ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় করা মামলায় বাসচালক নূরুজ্জামানসহ ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। এ মামলায় এজাহারভুক্ত এক আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন স্বর্ণলতা পরিবহন বাসের চালক নূরুজ্জামান নূরু, চালকের সহযোগী লালন মিয়া, চালকের খালাতো বোরহান উদ্দিন, কাউন্টার মাস্টার রফিকুল ইসলাম ও খোকন মিয়া, টিকিট বিক্রেতা বকুল মিয়া ও আল আমিন, বাসমালিক মো. আল মামুন এবং স্বর্ণলতা পরিবহনের এমডি পারভেজ সরকার। তাদের মধ্যে শাহিনুরকে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বোরহান উদ্দিন, স্বর্ণলতা পরিবহনের এমডি পারভেজ সরকার ও টিকিট বিক্রেতা আল আমিন এখনো পলাতক আছেন। বাকি ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ছয়জনের মধ্যে বাসচালক নূরুজ্জামান, চালকের সহযোগী লালন মিয়া ও কটিয়াদীর কাউন্টার মাস্টার রফিকুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৬ মে রাতে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের পিরিজপুরগামী স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসে নিজ বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিলেন শাহিনুর আক্তার। বাসটি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে অন্য যাত্রীরা নেমে যান। পরে কটিয়াদী থেকে পিরিজপুরে যাওয়ার পথে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের বাজিতপুর উপজেলার বিলপাড় গজারিয়া জামতলী এলাকায় চলন্ত বাসে চালক নুরুজ্জামান, চালকের সহযোগী লালন মিয়া ও চালকের খালাতো ভাই বোরহান উদ্দিন তাঁকে ধর্ষণের পর চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেন। মুমূর্ষু অবস্থায় শাহিনুরকে উদ্ধার করে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তে শাহিনুরকে গণধর্ষণের পর হত্যার আলামত পাওয়া যায়। শাহিনুর আক্তার রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ঘটনার পরের দিন নিহতের বাবা মো. গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে বাসের চালক নূরুজ্জামান নূরু, চালকের সহকারী লালন মিয়া, হাসপাতালে তানিয়ার মরদেহ নিয়ে আসা আল আমিন এবং পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে বাজিতপুর থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকায় ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল মামুনকে মামলার অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহান অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, তাঁরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বোরহানকে ধরতে পুলিশ সব জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে।