খবর৭১ঃ
ঈদুল আজহার আগে সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে। এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়ে যাওয়াকে অস্বাভাবিক বলছেন ক্রেতারা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, গুদাম থেকে পণ্য বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে দাম বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) কাওরান বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন নয়, মসলার দাম গত এক মাস ধরে বাড়তি। ঈদের আগে হঠাৎ করে দাম বাড়ালে ঝামেলায় পড়তে হতে পারে এ চিন্তা থেকে অসাধু ব্যবসায়ীরা আগেই দাম বাড়িয়েছেন। বাজার মনিটরিং না থাকায় ব্যবসায়ীরা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন।
এ বিষয়ে কাওরান বাজারে মসলা কিনতে আসা মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর এ সময়টাতে মসলার দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কারসাজির মাধ্যমে এগুলো করেন। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলে কোনো পণ্যের দাম বাড়ে না। এগুলো সরকারের মনিটরিংয়ের অভাবে হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক থেকে দেড় মাস আগে যে এলাচ প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা দরে তা এখন পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। আর এলাকার খুচরা বিক্রেতারা নিম্নমানের এলাচ বিক্রি করছেন ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায়। তবে শুধু এলাচ নয়, এভাবে বেড়েছে মসলা জাতীয় সব পণ্যের দাম।
বাজারে থাইল্যান্ড ও বার্মার আদা ১৪০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও আদা বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা করে। এটিও দুই সপ্তাহ আগে ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে। রসুন দেশি ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১৬০ টাকা ১৭০ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও এগুলো ১০০ থেকে ১১০ এবং ভারতীয় রসুন ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
লবঙ্গের কেজি পাইকারি বাজারে ৮শ থেকে ৯শ টাকা, দারুচিনির কেজি পাইকারি পর্যায়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, গোল মরিচ পাইকারি বাজারে ৪৫০ থেকে ৫২০ টাকায়, জিরা ৩৪০ থেকে ৩৯০ টাকা পর্যন্ত, আলু বোখারা পাইকারি বাজারে ৪০০ টাকা, কাঠ বাদাম ৮০০ টাকা কেজি প্রতি, কাজু বাদাম ৮৫০ থেকে ১ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া তেজপাতা পাইকারিতে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতিটি পণ্যের দাম ৫০, ১ শত ও ২ শত টাকা কেজিপ্রতি বেড়েছে।অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোরবানিতে মসলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে না বলা হলেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। ব্যবসায়ীরা জানান, বেশি দাম দিয়ে পণ্য কিনে এনেছেন তারা। তাই কিছু করার নেই, তাই বেশি দাম বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কাওরান বাজারের নোয়াখালী এন্টারপ্রাইজের সাইফুল ইসলাম বলেন, আমদানিকারকরা পণ্যের দাম বাড়ালে আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা পণ্য বেশি দাম দিয়ে কিনেছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে আমাদের এখানকার ব্যবসায়ীরা কোনো স্টক করে না। পণ্যের সংকট দেখিয়ে আমদানিকারকরা আমাদের কাছ থেকে পণ্যের বেশি দাম নিয়ে থাকলে আমাদের কিছু করার থাকে না।
তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ পাইকারি মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজারের মসলা আমদানিকারক আতিকুল হক বলেন, কাল থেকে মার্কেট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না।