খবর৭১ঃ
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক বন্ধের হুশিয়ারি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দুটি উপায়ের কথা উল্লেখ করে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ব্যাংক ভালোভাবে চলবে, না হয় বন্ধ হবে; এটি নির্ভর করছে আপনাদের ওপর।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনে বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, একটা সময় পর্যন্ত সমর্থন দেব, কিন্তু তা কোনোভাবে সীমাহীন নয়। আশা করব, বেসিক ব্যাংক অতীত ঐতিহ্য ফিরে পাবে। এর পরও টানা তিন বছর কোনো শাখা লোকসানে পড়লে সে শাখা বন্ধ করে দেয়া হবে।
ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দিয়ে খেলাপি হয়েছেন তাদের খুঁজে বের করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে এজেন্সির লোক লাগানো হবে। তাদের ঠিকানা চিহ্নিত করা হবে। তাদের দেশের বাইরেও যেতে দেয়া হবে না। এখনও সময় আছে ব্যাংকের টাকা ফেরত দিন।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, গত দুই বছর বেসিক ব্যাংকের যে সব শাখা লোকসান দিয়েছে। এ বছরও যদি তারা লোকসান দেয়। তাহলে ওইসব শাখা বন্ধ করে দেয়া হবে। এটা আমার অনুরোধ নয়, নির্দেশ। বর্তমানে ব্যাংকটির ৩৬টি শাখা লোকসানে আছে।
বেশি বেতন নেয়া, কাজ না করা ও ঋণ বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে কর্মকর্তাদের সাবধান করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২১০০ কর্মকর্তার কি কাজ আমি জানি না। একদিকে বেশি বেতন নিচ্ছেন। অন্যদিকে ব্যাংকের উন্নতি নেই। বেতন কার কত হবে এটা নিজেরা বসে নতুনভাবে ঠিক করে নিলে লোকসান অনেকটা কমে যাবে।
বেসিক ব্যাংকের মোট লোকসান ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা ঋণ পুনঃতফসিলের যে নীতিমালা করেছি তাতে অনেক টাকা আদায় হবে। কারণ ইতিমধ্যে ৩৮০ জন ঋণখেলাপি যোগাযোগ করেছেন। তাদের কাছে টাকার অংক ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। তাদের ৯ শতাংশ সুদে ঋণ পরিশোধের জন্য ১১ বছর সময় দেয়া হবে।
‘আমি কারও ঋণ মওকুফ করতে পারব না। তবে লজিস্টিক সাপোর্ট দেব। আপনারা পুরনো ঋণ গ্রহীতাদের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করুন। চিন্তা করতে হবে মাসে ১ কোটি টাকা বাঁচাতে পারলে অনেক সাশ্রয় হবে।’
বেসিক ব্যাংকে স্পেশাল অডিট করানো হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকলে শাস্তি কম-বেশি পেতে হবে। ঋণ বিতরণে কোনো কর্মকর্তাদের অবহেলা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীকে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে সম্মান সূচক ক্রেস্ট দিতে চাইলে; তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি এখন ক্রেস্ট নেব না। এক বছরে যদি তারা ভালো করতে পারে তাহলে ক্রেস্ট নেব।