“মশারির নিচে বাংলাদেশ”

0
1516
মশারির নিচে বাংলাদেশ

খবর৭১ঃ

ডেঙ্গু নিরাপদ সর্বশেষ জেলাটি ছিল নেত্রকোনা। গতকাল বুধবার ছোট্ট এ জেলা শহর থেকেও এসেছে দুঃসংবাদ। দেরিতে হলেও নেত্রকোনায় মিলেছে পাঁচ ডেঙ্গু রোগী। এর ফলে দেশের ৬৪ জেলার সব কটিতেই ঢুকে পড়ল ডেঙ্গু। গতকাল সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারা দেশে ১৭ হাজার ১৮৩ জন মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরো এক হাজার ৪৭৭ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছে ৯২৮ জন।

তবে মৃত্যুর হিসাব গণনায় এখনো লুকোচুরি করছে অধিদপ্তরটি। তাদের কাগজ-কলমের হিসাব ১৪ জনের মৃত্যু মেনে নিলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর বলছে, এ মৌসুমে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫০ ছাড়িয়েছে। গতকালও রাজধানী ঢাকা ও বরিশালে তিন নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এডিস মশার প্রজনন স্থানগুলো ধ্বংসে সফলতা পাওয়া না গেলে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব আরো বাড়তে পারে।

এদিকে এ রোগের এমন ভয়ানক বিস্তারের প্রেক্ষাপটে ডেঙ্গু পরীক্ষা বিনা মূল্যে করতে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা ও বরিশালে আরো চারজনের মৃত্যুঃ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও বরিশালে আরো চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর লালমাটিয়ার সিটি হাসপাতালে মারা যান পুলিশের এসআই কোহিনুর আক্তার (৩২)। তিনি পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) কর্মরত ছিলেন। এসবির ডিআইজি (পলিটিক্যাল) মাহবুব হোসেন জানান, কোহিনুর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কয়েক দিন আগে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে গত সোমবার রাতে তাঁকে লালমাটিয়ার সিটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। কোহিনুরের বাড়ি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে।

এদিকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে গতকাল বুধবার দুপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রবিউল ইসলাম রাব্বিকে (২২) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিক্যাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আব্দুর রহমান খান জানান, রাব্বির বাসা রাজধানীর শেওড়াপাড়ায়। তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।

গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি জানান, গৌরনদীতে গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আলেয়া বেগম (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি আশোকাঠি গ্রামের মান্নান ফকিরের স্ত্রী। আলেয়ার স্বজনরা জানায়, ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় আলেয়া তাঁর এক আত্মীয়র বাসায় বেড়াতে যান। ঢাকা থেকে গত সোমবার তিনি যখন এলাকায় আসেন তখন তাঁর প্রচণ্ড জ্বর ছিল। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে পরীক্ষা করানো হলে তাঁর ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরে রাত ১০টার দিকে গৌরনদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহাবুবুল আলম মির্জা জানান, আলেয়া বেগমকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছেন।

এদিকে শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরার জব্বার আকনকান্দি গ্রামের বর্ষা আক্তার (২৮) নামের এক নারী গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তিনি জাজিরার শাহেদ আলী মাদবরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। বর্ষা আক্তার গত ১৮ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত হন। প্রথম দিকে তিনি তেমন গুরুত্ব দেননি। জ্বর নিয়েই বিদ্যালয়ে যেতেন। বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৫ জুলাই পরিবারের সদস্যরা তাঁকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তাঁর শরীরে ডেঙ্গুর আলামত পান। তাঁরা তাঁকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরের দিন তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাঁকে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। স্বজনরা গত শনিবার তাঁকে ঢাকার সাইনবোর্ড এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তাঁকে কয়েক দফায় ১০ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। তাঁর অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। গত মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

 বাদ রইল না নেত্রকোনাঃ আমাদের নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, এত দিন নিরাপদে থাকা নেত্রকোনায়ও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। নেত্রকোনার সিভিল সার্জন ডা. তাজুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার ঢাকায় বসবাসকারী পাঁচজন নেত্রকোনায় আসে। গতকাল বুধবার শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পরীক্ষা শেষে তাদের পাঁচজনেরই ডেঙ্গু ধরা পড়ে। আক্রান্তরা হলো নেত্রকোনার সাতপাই এলাকার কামাল মিয়ার ছেলে মামুন (১৩), কুরপাড় এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে মফিজুল ইসলাম (৩৭), নেত্রকোনা সদর উপজেলার সুকন্দিয়া গ্রামের মতি মিয়ার ছেলে শাহজাহান (২৬), কলমাকান্দার চান মিয়ার ছেলে ওয়াজিব (১৮) এবং মোহনগঞ্জের দৌলতপুর গ্রামের আব্দুল হেকিমের মেয়ে রিমু আক্তার (১৭)।

সরকারি হিসাবেও মৃত্যু বেড়েছেঃ কয়েক দিন ধরেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যু নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি তথ্যে কয়েক গুণ ব্যবধান চলছে। সরকারি হিসাবে মৃত্যু আটজনেই আটকে ছিল কয়েক দিন, তবে গতকাল বুধবার ওই সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে উঠেছে। এর মধ্যে ১৩ জনেরই মৃত্যু হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে আর মাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছে একটি সরকারি হাসপাতালে। অন্যদিকে এই ১৪ জনের মধ্যে ১০ জনই মারা গেছে জুলাই মাসে। তবে সরকারি কন্ট্রোল রুমের এ তথ্যের বাইরে শুধু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে ওই হাসপাতালের তালিকায়। এ ছাড়া বরিশালে গত দুই দিনে তিনজন মারা গেছে। এ ছাড়া ঢাকা শিশু হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকার বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালে কয়েকজন করে মৃত্যুর তথ্য রয়েছে ওই হাসপাতালগুলোর নিজস্ব তথ্য তালিকায়। সব মিলিয়ে গতকাল পর্যন্ত ওই সংখ্যা ৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে।

ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা বিনা মূল্যে করার আহ্বানঃ এদিকে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিনা মূল্যে করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল বুধবার রাজধানীর ধানমণ্ডি লেক পারে আওয়ামী লীগের মশা নিধন ও সচেতনতামূলক প্রচার অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘গরিব মানুষের পক্ষে পাঁচশ-হাজার টাকা দিয়ে এই রোগের রক্ত পরীক্ষা করার অবস্থা নেই। তাই চিকিৎসকদের বলব মানবতার স্বার্থে নামমাত্র ১০০ টাকা অথবা বিনা পয়সায় রক্ত পরীক্ষা করুন। রক্ত পরীক্ষার কাজটি স্বাচিপ ও বিএমএ বিনা পয়সায় করার ব্যবস্থা করবে বলে আশা করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আজ পুরো জাতি ডেঙ্গুর ভয়ংকর বিস্তারে উদ্বিগ্ন। এই প্রাণঘাতী ডেঙ্গুকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।’ ওবায়দুল কাদের মানবিক প্রয়োজনে ডেঙ্গু রোগীদের রক্ত দিতে সবাইকে এগিয়ে আসারও অনুরোধ করেন।

এদিকে ‘শেখ হাসিনার নির্দেশ ডেঙ্গুমুক্ত বাংলাদেশ’, ‘শেখ হাসিনার নির্দেশ পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে গতকাল বুধবার থেকে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের তিন দিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সারা দেশে একযোগে সব জেলা, মহানগর, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে তিন দিনব্যাপী এই কর্মসূচি চলবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ সম্মেলনঃ মশার প্রজননস্থল নির্মূলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক সেব্রিনা ফ্লোরা। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘যত রকম ওষুধই ব্যবহার করি না কেন যদি সোর্স রিডাকশন না হয় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। যদি সোর্স রিডাকশনে আমরা সবাই মিলে কাজ না করি তাহলে ট্রেন্ড থামানো যাবে না। সেদিক থেকে প্রত্যেক নাগরিককে সচেতন করার দায়িত্ব আমাদের সবার। সেটা না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়বে। পরে আস্তে আস্তে কমে আসবে।’

ডেঙ্গু পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় রি-এজেন্টের সংকট দেখা দেওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে ৫০ হাজার এনএসওয়ান কিট আমদানি করা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক সানিয়া তহমিনা, জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রগ্রাম ম্যানেজার এম এম আক্তারুজ্জামান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আয়েশা আক্তার প্রমুখ।

ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে হবে গবেষণা কেন্দ্রঃ ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে একটি কেন্দ্রীয় গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। রাজধানীর নর্থ সাউথ ইউনির্ভাসিটিতে গতকাল বুধবার ‘বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক সভায় এ কথা জানান তিনি। সভায় মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু এখন জাতীয় সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সরকার ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে একটি কেন্দ্রীয় গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করছে; যার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে এ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চালানো হবে।’

সম্মিলিত উদ্যোগের বিকল্প নেইঃ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সম্মিলিত উদ্যোগের বিকল্প নেই। ডেঙ্গু সারা দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। দিন দিন পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের আয়োজনে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সমাবেশ ও শোভাযাত্রায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। নগর কর্তৃপক্ষ সর্বশক্তি দিয়ে এ রোগ মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে। জনগণও ধীরে ধীরে এ বিষয়ে সচেতন হচ্ছে।

মাঠে নামছে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরাঃ ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে নামছে সব মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ কমর্সূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরঃ ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসে প্রশিক্ষণ দিতে ঢাকা শহরের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের দুই লাখ শিক্ষার্থীর কাছে যাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৪০০ কর্মী। তারা ডেঙ্গুর উৎসস্থল নির্মূল কিভাবে করা যায় সে বিষয়ে শিশুদের প্রশিক্ষণ দেবে।

ঢামেক হাসপাতালের উদ্যোগঃ ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরো বাড়লে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নির্মাণাধীন ভবনে একটি ইউনিট খুলে চিকিৎসা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালের পুরনো ভবনও ব্যবহার করা হবে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন গতকাল বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বানঃ ডেঙ্গু আক্রান্ত দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সহায়তায় ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সার্কুলারে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিভাগ ভিত্তিক ডেঙ্গু আক্রান্তের পরিসংখ্যানঃ

ঢাকা বিভাগঃ ঢাকা বিভাগের ঢাকা জেলায় ১৭৪ জন, গাজীপুরে ১২০, গোপালগঞ্জে ১০, মাদারীপুরে ২৪, মানিকগঞ্জে ৩২, নরসিংদীতে ২৬, রাজবাড়ীতে ৩৭, শরীয়তপুরে ১২, টাঙ্গাইলে ৫১, মুন্সীগঞ্জে ২৭, কিশোরগঞ্জে ১০৩, নারায়ণগঞ্জে ২৪ এবং ফরিদপুরে ২ জনসহ মোট ৬৪২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিভাগঃ চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলায় ২২৬ জন, ফেনীতে ৮৫, কুমিল্লায় ৬৫, চাঁদপুরে ১০২, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৬, লক্ষ্মীপুরে ৩৩, নোয়াখালীতে ৪১, কক্সবাজারে ১৭, খাগড়াছড়িতে ১০, রাঙামাটিতে ৩ এবং বান্দরবানে ১ জনসহ মোট ৬০৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

খুলনা বিভাগঃ খুলনা জেলায় ১৮০ জন, কুষ্টিয়ায় ৭২ জন, মাগুরায় ৮ জন, নড়াইলে ১০ জন, যশোরে ৯৮ জন, ঝিনাইদহে ২৬ জন, বাগেরহাটে ৮ জন, সাতক্ষীরায় ২৩ জন, চুয়াডাঙ্গায় ৮ জন ও মেহেরপুরে ৩ জনসহ মোট ৪৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

রাজশাহী বিভাগঃ রাজশাহী জেলায় ৮১ জন, বগুড়ায় ১১৬ জন, পাবনায় ৪৯ জন, সিরাজগঞ্জে ১৯ জন, নওগাঁয় ১০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৮ জন, নাটোরে ৫ জন ও জয়পুরহাটে ১ জনসহ মোট ২৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

রংপুর বিভাগঃ রংপুর জেলায় ৭৯ জন, লালমনিরহাটে ৩ জন, কুড়িগ্রামে ৫ জন, গাইবান্ধায় ৬ জন, নীলফামারীতে ৮ জন, দিনাজপুরে ৩৩ জন, পঞ্চগড়ে ২ জন ও ঠাকুরগাঁওয়ে ১২ জনসহ মোট ১৪৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

বরিশাল বিভাগঃ বরিশাল জেলায় ১০১ জন, পটুয়াখালীতে ১৬ জন, ভোলায় ৭ জন, পিরোজপুরে ৩ জন ও ঝালকাঠিতে ১ জনসহ মোট ১২৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

সিলেট বিভাগঃ সিলেট জেলায় ১৬৮ জন, সুনামগঞ্জে ৭ জন, হবিগঞ্জে ১৩ জন, মৌলভীবাজারে ২৬ জনসহ মোট ১৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

ময়মনসিংহ বিভাগঃ ময়মনসিংহে মেডিকেল কলেজে ২০৩ জন, জামালপুরে ৪৭ জন এবং শেরপুরে ১৪ জনসহ মোট ২৫৬ আক্রান্ত হয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here