খবর৭১ঃ সারা দেশে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গুজ্বর। ডেঙ্গু মোকাবেলার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সারা দেশে ডেঙ্গুর বিস্তারে হাইকোর্টও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তবে বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী ভারতের কলকাতায় গত কয়েকবছর ধরে সফলভাবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় প্রশাসন।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে গত কয়েকবছর যাবত কলকাতায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
কলকাতা কর্পোরেশন সারা বছর ধরে নিবিড় নজরদারি চালায় – যাতে কোথাও পানি জমে না থাকে। এর জন্য বহু কর্মীও যেমন রয়েছেন, তেমনই এবার এ কাজে আকাশে ড্রোনও ওড়ানো হবে ।
শহরের প্রতিটি হাসপাতাল, নার্সিং হোম বা পরীক্ষাগারে রোগীদের কী কী রক্ত পরীক্ষা হচ্ছে, কী ভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে, প্রতিদিন তা সরকারিভাবে হিসাব রাখা হয়, যাতে ডেঙ্গু রোগীর খোঁজ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
বিবিসি জানায়, একটা সময় বর্ষা শুরু হলে কলকাতা কর্পোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে নামতো। কিন্তু ততদিনে শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ত।
কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে কলকাতা কর্পোরেশন সারা বছর ধরেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে শুরু করেছে।
কলকাতার ডেপুটি মেয়র ও স্বাস্থ্য দফতরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ জানান, তারা কয়েকটি স্তরে বছরজুড়ে নজরদারি চালান।
তিনি জানান, প্রথমত, ১৪৪ টা ওয়ার্ডের প্রতিটাতেই আমাদের ২০ থেকে ২৫ জন করে কর্মী আছেন, যাদের মধ্যে একদল প্রচারের কাজ চালায়, আর অন্য দল পানি জমছে কী না কোথাও, সেদিকে নজর রাখে।
অতীন ঘোষ আরও বলেন, ১৬টি বরোর প্রত্যেকটার জন্য একটা করে র্যাপিড অ্যাকশন টিম রয়েছে। ৮ থেকে ১০ জন লোক সব ধরনের সরঞ্জাম ও গাড়ি নিয়ে প্রস্তুত থাকে। কোথাও ডেঙ্গুর খবর পাওয়া গেলে তারা অতি দ্রুত সেখানে পৌঁছে এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণের কাজ করে।
এ ছাড়া যেসব বিল্ডিংয়ে পানি জমে থাকে তাদের থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার আইন করা হয়েছে।
আবার পানি পরিষ্কার করে দেয়ার খরচ বাবদ বিল, বাড়ির বার্ষিক করের বিলের সঙ্গে পাঠিয়ে দিচ্ছে কর্পোরেশন।
অতীন ঘোষ বলেন, আরও ভালোভাবে নজরদারির জন্য এবার আকাশে ড্রোন ওড়ানোর পরিকল্পনা হচ্ছে, যা থেকে মশা মারার তেলও ছড়ানো যাবে।
বাংলাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার খবরে কলকাতার স্বাস্থ কর্মকর্তারাও চিন্তিত। কারণ বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ কলকাতায় যান।
কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানান, বাংলাদেশ চাইলে যে কোনও ধরণের সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে কলকাতার স্বাস্থ্য দফতর।