দেশের কোনো দুধে স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই : বিএআরসি

0
534

খবর৭১ঃ দেশে উৎপাদিত পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত দুধে কোনো প্রকার স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)।

বুধবার সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের উপস্থিতিতে দুধ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক, সালফার ড্রাগ ও ভারি ধাতুর উপস্থিতি বিশ্লেষণ ফলাফল প্রকাশ করেন বিএআরসির পুষ্টি ইউনিটের পরিচালক ড. মো. মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত দুধে কোনো প্রকার ভারি ধাতু ও সালফার ড্রাগ পাওয়া যায়নি। দেশে উৎপাদিত দুধে কোনো প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই। এ নিয়ে উদ্বেগ বা কোনো উৎকণ্ঠা নেই।

ভারতের চেন্নাইয়ের এসজিএস গবেষণাগারে মিল্ক ভিটা, আড়ং, ফার্ম ফ্রেশ, ইগলু, আরডি, সাভার ডেইরি ও প্রাণ এবং অপাস্তুরিত (কাঁচা তরল দুধ) দুধের ১৬টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।

ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি স্থানীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাজার থেকে পাস্তুরিত ও কাঁচা তরল দুধের নমুনা সংগ্রহ করে স্থানীয় কয়েকটি ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করে অ্যান্টিবায়োটিক ও ভারি ধাতুর উপস্থিতি রয়েছে বলে দাবি করেন। পরবর্তীকালে এ সব রিপোর্ট হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়।

খাদ্যপণ্যের গুণগত মান বিশ্লেষণে আমাদের দেশে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো ল্যাবরেটরি নেই জানিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় এ সব গবেষণাগারের বিশ্লেষণ সক্ষমতা বা মান কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা প্রশ্নবিদ্ধ।

‘কিন্তু বিভিন্ন সময়ে একশ্রেণির সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা কোনো প্রকার বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত বা কোনো প্রকার মানসম্পন্ন গবেষণা ফলাফল ছাড়াই অনেকটা দায়সারা রিপোর্ট তৈরি করে ক্রমাগতভাবে বিভিন্ন পণ্যের মান নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে চলেছে।’

বিগত বছরগুলোতেও এ সব তথাকথিত শ্রেণির লোকেরা ফল, সবজি, মাছসহ খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন প্রয়োগ করা হয় বলে ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে; ফলে মানুষ শুধু ফল খাওয়াই ছেড়ে দেয়নি, এতে আর্থিক ক্ষতিসহ বৈদেশিক বাজারেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে এবং হচ্ছে।

জনমনের অস্থিরতা দূরীকরণে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক, সালফার ড্রাগ ও ভারি ধাতুর অবশিষ্টাংশের উপস্থিতি বিশ্লেষণের জন্য বিএআরসি দেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বাজারজাতকৃত পাস্তুরিত দুধসহ কাঁচা তরল দুধ সংগ্রহ করে।

এ সব নমুনায় কোনো প্রকার অ্যান্টিয়োটিক, সালফার ড্রাগ ও ভারি ধাতুর রেসিডিউ/অবশিষ্টাংশের উপস্থিতি আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়।

ঢাকার মোহাম্মদপুর, ধানমণ্ডি, গুলশান ও ফার্মগেট এলাকা থেকে পাস্তুরিত দুধ এবং অপাস্তুরিত দুধের নমুনা সাভারের রাজাসনের খামার থেকে সংগ্রহ করা হয়।

প্রতিটি পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত দুধের নমুনা সরাসরি বিশ্লেষণসহ একই সঙ্গে এ সব দুধের প্রতিটি নমুনা নয় মিনিট সিদ্ধ করে অ্যান্টিবায়োটিক, সালফার ড্রাগ ও ভারি ধাতুর অবশিষ্টাংশের উপস্থিতিও বিশ্লেষণ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্লেষণ ফলাফলের বিষয়ে বলা হয়- পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত দুধে কোনো প্রকার ভারি ধাতু যেমন- লিড ও ক্রোমিয়ামের রেসিডিউ (অবশিষ্টাংশ) পাওয়া যায়নি। এমনকি দুধে কোনো প্রকার সালফার ড্রাগের অবশিষ্টাংশ পাওয়া যায়নি।

এ সব দুধ খেলে মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না, যদি ক্ষতি হয় সে দায় আপনারা নেবেন- এ প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে দুধের উৎপাদন হয়। অনেক শিল্প এলাকা, শহর এলাকাতেও গাভী পালন করে। এখন হঠাৎ কোথাও যদি ভারি ধাতু হয়ে থাকে, আমরা পরীক্ষা করিয়েছি সেগুলো খুব নির্ভরযোগ্য। এটার ভিত্তিতে আমরা বলছি, এগুলোতে আমরা পাইনি।’

‘কিন্তু একেবারে সব দুধ ভালো, এটা আমি ওইভাবে তো দিতে পারব না। হঠাৎ যদি কেউ কন্ট্রামিনেট করে। কিন্তু ইনজেনারেল এটা (ভারি ধাতু/অ্যান্টিবায়োটিক) হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।’

‘গত ১৬ জুলাই নমুনা পাঠানো হয়েছিল, আমরা মনে করি এসজিএস-এর রিপোর্টটা রিলায়েবল ও সারা পৃথিবীর জন্য এটি গ্রহণযোগ্য। সিঙ্গাপুরে করালেও একই রিপোর্ট হতো। ১৩০টি দেশে এসজিএস-এর ল্যাবরেটরি আছে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা যে সব দুধের পরীক্ষা করিয়েছি সেগুলো অবশ্যই নিরাপদ এবং কোনো রকম সমস্যা নেই। আর ছোট ছোট যে কোম্পানি আছে আমার ধারণা তারাও হয়তো ভালোই হবে। তবুও এগুলো পরীক্ষার দাবি রাখে। আগামীতে আমরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠাব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here