খবর৭১ঃ ডেঙ্গুজ্বর আতঙ্কে ভুগছে দেশ। রাজধানীসহ সারাদেশে স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ। হিসেবে করলে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতি মিনিটেই একজন করে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলো একটি বিশেষবার্তা।
বার্তাটি হলো, ‘ঢাকায় বসবাসকারী সবাই যদি আগামী শুক্রবার জুমার পরে প্রত্যেকের বেসিনে ৫০০ এমএল-এর একটা হারপিক বা ৫০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডার একযোগে ঢেলে পানি দিন! তাহলে ঢাকা শহরের ৭০ শতাংশ ড্রেন, ডোবা-নালাসহ সব মশার ডিম পাড়ার পানির উৎসে থাকা মশা এবং এর লার্ভা ধ্বংস হয়ে যাবে। (বিঃ দ্রঃ) জনস্বার্থে বার্তাটি শেয়ার করুন।’
এমন বার্তা পেয়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে পরিত্রাণ পেতে অনেকেই হারপিক ও ব্লিচিং পাউডার কেনার জন্য দোকানে ভিড় জমিয়েছেন। তারা না বুঝেই বার্তাটিকে সঠিক মনে করে ম্যাসেঞ্জারে, গ্রুপে ও পেজে শেয়ার করছেন।
এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, এধরনের কোনো বার্তা সরকারিভাবে দেয়া হয়নি। বিষয়টি একেবারেই ভুয়া।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে জরুরি এক সভায় এ কথা জানান উপস্থিত কর্মকর্তারা।
বেসিনে হারপিক, ব্লিচিং পাউডার ঢাললে মশা নিধন হবে এমন বার্তাকে ভুয়া জানিয়ে অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ফেসবুকে ভাইরাল এই বার্তাটিতে রাজধানীবাসী বিভ্রান্ত হবেন না।
তিনি আরও বলেন, বেসিনে হারপিক, ব্লিচিং পাউডার ঢাললে মশা তো দূর হবেই না উল্টো মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে। পরিবেশ নষ্ট হবে এ রাসায়নিক দুটিতে। এমন উপায়ে এডিস মশা ধ্বংস করার চিন্তা-ভাবনা ধ্বংসাত্মক। হঠাৎ এতো পরিমান হারপিক ও ব্লিচিং পাউডারের রাসায়নিক পানিতে দ্রবীভূত হয়ে মানবদেহ, জলজপ্রাণী, উদ্ভিদসহ পরিবেশ ও প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করবে।
বিষয়টিকে আরও ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ায় ডেঙ্গু মশা মরবে না। কারণ ডেঙ্গু মশা ড্রেনের ময়লা পানিতে জন্মায় না। ড্রেনে এক ধরনের মাছ আছে যেগুলো পোকামাকড় খায়, হারপিক বা ব্লিচিং পাউডার ড্রেনে গেলে ওইসব মাছ মারা যাবে, নদীর পানিতে গেলে মাছসহ জলজ বিভিন্ন প্রাণী মারা যাবে। প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই ভুলেও এ কাজটি করতে যাবেন না।
সভায় পরিবেশ অধিদফতর, কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ, আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।