রূপপুরে দুর্নীতিঃ মামলার প্রস্তুতি ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

0
459
রূপপুরে দুর্নীতিঃ মামলার প্রস্তুতি ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

খবর৭১ঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কেনাকাটার অনিয়মের সঙ্গে ৩৪ কর্মকর্তা জড়িত। এর মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের রূপপুর প্রকল্পের পরিচালকসহ চার কর্মকর্তা রয়েছেন। বাকি ৩০ কর্মকর্তা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের। এঁদের ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

এ ছাড়া কেনাকাটার অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাজিন কনস্ট্রাকশন ও মাজিদ সন্স কনস্ট্রাকশনকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত এবং আইনি ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। এই প্রকল্পে বালিশসহ অন্যান্য পণ্য কেনাকাটার দুর্নীতি উদ্‌ঘাটনে গঠিত দুই কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মন্ত্রী বলেন, রূপপুর প্রকল্পের কেনাকাটায় দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির মাধ্যমে ৩৬ কোটি টাকার বেশি নিয়ে গেছে। এ জন্য ওই দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

তবে তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্নীতির জন্য সাজিন কনস্ট্রাকশন, মাজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন ও জেকেপিবিএল-পায়েল-এইচএসএল জেবি নামের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ বালিশ দুর্নীতিঃ নির্বাহী প্রকৌশলী প্রত্যাহার

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, রূপপুরের কেনাকাটার দুর্নীতির সঙ্গে ৩৪ কর্মকর্তা যুক্ত রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক শৌকত আকবর, উপপ্রকল্প পরিচালক হাসিনুর রহমান, দুই উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মেহেদী হাসান ও মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কারণ, তাঁরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ৩০ কর্মকর্তা গণপূর্ত অধিদপ্তরের। এর মধ্যে অবসর-উত্তর ছুটিতে (পিআরএল) ৩ জন ও ১ গেছেন অবসরে। চাকরিরত ২৬ কর্মকর্তার মধ্যে ১৫ জন কেনাকাটার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন, তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এর আগেই গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (পাবনা) মাসুদুল আলমকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এই ১৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও মামলা করা হবে। এ ছাড়া বাকি ১১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, চারটি ভবনের আসবাবসহ অন্যান্য কেনাকাটা বাবদ ১১৩ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেশি বিল দেওয়া হয়েছে। এই দুর্নীতির দায়ে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের কোনো প্রকল্পের কাজে অংশ নিতে পারবে না। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে অর্থ আদায় করা হবে বলেও তিনি জানান।

আরও পড়ুনঃ রূপপুরের বালিশকাণ্ডঃ আটকে গেল সব বিল

অথচ এর আগে ১৯ মে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কোনো বিল দেওয়া হয়নি। বিল দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রেজাউল করিম বলেন, ‘এখানে অনেকগুলো কাজ হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে একটির কেনাকাটার বিরুদ্ধে। আমরা সবগুলোর ওপরই তদন্ত করেছি। অন্যগুলোর বিল আগেই দেওয়া হয়ে গেছে।’

দুই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন রূপপুর প্রকল্পের কোনো কর্মকর্তার নাম ছিল না। এই নাম কি পরে প্রতিবেদনে যুক্ত করা হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম বলেন, ‘আপনারা যে প্রতিবেদন পেয়েছেন সেখানে নেই। প্রতিবেদন তো অনেক বড়। অন্য পৃষ্ঠায় তাঁদের নাম আছে।’

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here