এনামুল বাছিরের জামিনের আবেদন নাকচ; কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

0
534
এনামুল বাছিরকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
বরখাস্ত দুদক পরিচালক এনামুল বাছির।

খবর৭১ঃ

ঘুষ কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেপ্তার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস এ আদেশ দেন।

এর আগে দুপুর ২টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয় বাছিরকে। তাঁর আইনজীবী আদালতে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ করেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

গতকাল সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে মিরপুরের দারুসসালাম এলাকার একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, ৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় বাছিরসহ পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গত ১৬ জুলাই মামলা দায়ের করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষায় ঘুষ লেনদেন নিয়ে তাঁদের কথোপকথনের অডিওর সত্যতা পাওয়ার পর তাঁদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়।

পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমান মিজানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ছিলেন খন্দকার এনামুল বাছির। মিজানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার ঘটনায় ফেঁসে যান তিনি। ২০১৭ সালে অভিযোগ উঠলেও ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডিআইজি মিজানের সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। তদন্তের শুরুতে মিজানের সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্বে ছিলেন দুদক উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। তাঁর বিরুদ্ধেও ঘুষ দাবির অভিযোগ করেছিলেন মিজান। পরে ফরিদকে বাদ দিয়ে এই মামলা তদন্তে বাছিরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর বরখাস্ত হন বাছির। পরে মিজানের সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান দুদক পরিচালক মনজুর মোরশেদ।

আরও পড়ুনঃ বরখাস্ত দুদক পরিচালক এনামুল বাছির গ্রেফতার

গত ৯ জুন মিজান-বাছিরের ঘুষ লেনদেনের কথোপকথনের একাধিক অডিও প্রকাশ করেন স্বয়ং মিজান। মিজান দাবি করেন, দুদকের মামলা থেকে বাঁচতে বাছিরকে দুই দফায় (২৫ লাখ ও ১৫ লাখ) টাকা ঘুষ দিয়েছেন। এরপর ৯ জুন কথোপকথনের অডিও প্রকাশের ঘটনা অনুসন্ধানে দুদক সচিব দিলোয়ার বখতকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন হয়। এই কমিটির সুপারিশে তথ্য ফাঁসের অভিযোগ এনে ১০ জুন বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুদক।

এরপর ১১ জুন বাছির দাবি করেন, ঘুষ লেনদেনের কথোপকথনে ব্যবহৃত কণ্ঠ সম্পূর্ণ বানোয়াট। ১২ জুন মিজানের সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান দুদক পরিচালক মনজুর মোরশেদ। পরবর্তী সময়ে মিজান-বাছিরের ঘুষ লেনদেনের (অডিও প্রকাশ) ঘটনায় দুদকের অনুসন্ধান কমিটি গঠন হয় ১৩ জুন। তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটির প্রধান হলেন দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা। অন্য দুই সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান ও মো. সালাউদ্দিন।

গত ১৬ জুন মিজান-বাছিরের ঘুষ লেনদেনের কথোপকথনের অডিও ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারে (এনটিএমসি) পাঠায় দুদক। ২৫ জুন মিজানকে সাময়িক বরখাস্ত করার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ২৬ জুন বাছিরের বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক।

ঘুষ লেনদেনের অডিও প্রকাশের ঘটনার সূত্র ধরে ৩০ জুন দুদকের সাবেক পরিচালক আব্দুল আজিজ ভুঁইয়া ও জায়েদ হোসেন খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনুসন্ধান কমিটি। ১ জুলাই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজির হননি বাছির। বাছিরকে দ্বিতীয় দফায় ১ জুলাই নোটিশ পাঠিয়ে ১০ জুলাই দুদকে হাজির হতে বলা হয়। ঘুষ লেনদেন নিয়ে মিজান-বাছিরের অডিও সংলাপের ফরেনসিক প্রতিবেদন দুদকে জমা হয় ৪ জুলাই। অডিও সংলাপের কণ্ঠ পরীক্ষা করে এনটিএমসি। পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় মিজান-বাছির ঘুষ লেনদেন নিয়ে কথা বলেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here