খবর৭১ঃ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করা প্রিয়া সাহাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কোনো ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শুরু না করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার দুপুরে একথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রিয়া সাহা কেন এমন কাজ করেছেন এ বিষয়ে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকা উচিত।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে তার (প্রিয়া সাহা) বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি করে ব্যবস্থা নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন সম্পর্কে প্রিয়া সাহা যে নালিশ করেছেন এ বিষয়ে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। উনি কোন উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেছেন তা জানতে হবে, এরপর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে রোববার সকালে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ঢাকায় দুটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন। আর অপর মামলাটি করেছেন ঢাকা বারের আইনজীবী সমিতির বর্তমান কার্যকরী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. ইব্রাহিম খলিল।
প্রসঙ্গত গত ১৬ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ১৬ দেশের প্রতিনিধি অংশ নেন। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেন, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশে তিন কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নিখোঁজ রয়েছেন। দয়া করে আমাদের লোকজনকে সহায়তা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। এর পর তিনি বলেন, এখন সেখানে এক কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িঘর খুইয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা আমাদের ভূমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি। ভিডিওতে দেখা গেছে, একপর্যায়ে ট্রাম্প নিজেই সহানুভূতিশীল হয়ে ওই নারীর সঙ্গে হাত মেলান।
কারা এমন নিপীড়ন চালাচ্ছে? ট্রাম্পের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘দেশটির মৌলবাদীরা এসব করছে। তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পাচ্ছে।’ প্রিয়া সাহার দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির বহু উদাহরণ সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরছেন নেটিজেনরা।
‘৭১-এর চেতনায় গঠিত যে দেশে সব ধর্মের নাগরিক সমান অধিকারে সহাবস্থান করে বিশ্বে অসাম্প্রদায়িকতার মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে, সেই দেশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে প্রিয়া সাহার এমন বক্তব্য কখনই মেনে নেয়ার মতো নয় বলেও অভিমত দিচ্ছেন সচেতনরা।