খবর৭১ঃ
মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ অবিরাম বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কুশিয়ারা ও খোয়াই নদীর পর এবার করাঙ্গী নদী দিয়েও বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বন্যার পানি। ফলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন এলাকার হাট বাজার ঘর-বাড়িসহ স্কুল কলেজ তলিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। চলাচলে ঘটছে ব্যাঘাত। এদিকে, বৃষ্টি চলমান থাকার কারনে বাহুবল উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয়েও পানি প্রবেশ করেছে। বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীননাথ ইনস্টিটিউশন সাতকাপন সরকারি হাই স্কুলটি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ক্লাস রুমের ভিতরে হাটু পানি আর মাঠ দেখতে যেন পুকুর পানিতে পরিনত হয়েছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারনে স্কুলটিতে হু-হু করে বেড়েই চলছে পানি। এতে করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে। ব্যাহৃত হয়ে পড়ছে পাঠদান । আবার স্কুল বন্ধ না থাকায় কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পানির উপর বসেই ক্লাস করছে। খবর পেয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে স্কুলটি পরিদর্শন করেন বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা হকসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানায়, ‘বন্যার পানি সকাল (সোমবার) থেকেই হু-হু করে বাড়ছে। যে কারনে স্কুলের মাঠটি ডুবে এবার ক্লাস রুমে প্রবেশ করছে পানি। ফলে তাদের ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে’। এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রণয় চন্দ্র দেব জানান, ‘করাঙ্গী নদীর উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। যে কারণে স্কুলের মাঠ ডুবে এবার ক্লাস রুমে প্রবেশ করছে পানি। ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নাই বললেই চলে। আজ (সোমবার) যে কয়েকজ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এসেছে স্কুলের দু’তলায় তাদের ক্লাস নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও স্কুলের ভেতরে পানি প্রবেশ করায় অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে’।
এছাড়া বৃষ্টির কারণে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে করাঙ্গী নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। নদীতে পানির স্রোতে বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাত জেগে মানুষ ঝুকিপূর্ণ বাঁধ পাহারা দিচ্ছে। নদীর এক পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ না থাকায় উপজেলার অন্ততঃ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নদীর অপরপাশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধেরও বিভিন্ন স্থান রয়েছে হুমকির মুখে। যে কোন সময় একাধিক ভাঙন সৃষ্টি হয়ে ফসলাদি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের বড়গাঁও, শফিয়াবাদ, সাহানগর, গাংপাড়, রশিদপুর, পূর্ব ভাদেশ্বর, কসবাকরিমপুর, ডুমগাও, নোয়াগাঁও, পুরান মৌড়ি, জয়নাবাদ, বাহুবল, উত্তরসুর, কবিরপুর, মানিকা প্রভৃতি গ্রামের নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও নদীর ওপরপাড়ের নিজগাঁও, পশ্চিম ভাদেশ্বর, ইসলামপুর ও দশকাহনিয়া গ্রামের বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধা ভাঙনের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় ওইসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ভেঙে জনবসতিসহ ফসলাদি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। করাঙ্গী নদীর ব্রীজের একপাশের মাঠি ধ্বসে পড়ায় যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরের ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রীজটি দিয়েই প্রতিদিন শত শত ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করছে। হবিগঞ্জে স্কুলের ভেতরে হাঁটু পানি, তবু চলছে পাঠদান মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কারণে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি। কুশিয়ারা ও খোয়াই নদীর পর এবার করাঙ্গী নদীর পানিও বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে হাট বাজার ঘর-বাড়িসহ স্কুল কলেজ তলিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ার কারণে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও। এদিকে, স্কুলগুলোতে পানি উঠার ফলে ব্যাহৃত হচ্ছে পাঠদান। সরেজমিনে বাহুবল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীননাথ ইনস্টিটিউশন সাতকাপন সরকারি হাই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের শ্রেণীকক্ষে ঢুকে পড়েছে পানি। এরই মধ্যে আবার কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পানির মধ্যেই ক্লাস করছে। দীননাথ ইনস্টিটিউশন সাতকাপন সরকারি হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রণয় চন্দ্র দেব জানান, করাঙ্গী নদীর উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। যে কারণে স্কুলের মাঠ ডুবে এবার ক্লাস রুমে প্রবেশ করছে পানি। তিনি বলেন, স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। তবে শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে। গুটিকয়েক শিক্ষার্থী সোমবার ক্লাসে এসেছে। তাদেরকে স্কুলের দু’তলায় ক্লাস নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও স্কুলের ভেতরে বন্যার পানি প্রবেশ করা ফলে স্কুলের অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। এদিকে, খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে স্কুলটি পরিদর্শনে যান বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা হকসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। শিক্ষার্থীরা জানান, বন্যার পানি সোমবার সকাল থেকেই বাড়ছে।