মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকেঃ
সৈয়দপুরে বোরো ধান সংগ্রহ অভিযানে দ্বিতীয় দফায় অতিরিক্ত বরাদ্দ পাওয়া ধান ক্রয়ের জন্য লটারীর মাধ্যমে কৃষক বাছাই করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম শেষ হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। তিন দিনব্যাপী এ কার্যক্রমে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নসহ পৌর এলাকায় ৮১২ জনের মধ্যে ৭৯৬ জন কৃষককে লটারীর মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়।
সূত্র জানায়, সারাদেশে কৃষকদের স্বার্থে চলতি বোরো মওসুমে সরকার ২য় দফায় অতিরিক্ত ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই অংশ হিসেবে সৈয়দপুরে বরাদ্দ মেলে ৩৯৪ মেট্রিক টন ধান। একজন কৃষক সর্বোচ্চ ৪৮০ কেজি ধান সরাসরি সরকারি খাদ্য গুদামে বিক্রি করতে পারবেন। সে হিসেবে ৮১২ জন কৃষক বাছাইয়ের জন্য উপজেলা প্রশাসন লটারী প্রক্রিয়া শুরু করে। উপজেলার জনসংখ্যার ভিত্তিতে কৃষকদের তালিকা নির্ধারণ করা হয়। এতে কামারপুকুর ইউনিয়নে ১২৬ জন, কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নে ১৪৪ জন, বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নে ১৩৩ জন, বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে ১৫৫ জন, খাতামধুপুর ইউনিয়নে ১৩৫ জন ও পৌর এলাকায় ১০৩ জন কৃষক ধান বিক্রির সুবিধা পাবেন বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সূত্র মতে, সৈয়দপুর উপজেলায় বিতর্ক এড়িয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ধান সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটি ধান ক্রয়ে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় এবং পৌর এলাকার জন্য উপজেলা পরিষদ চত্বরে লটারী কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার লটারী হয়। এর আগে বুধবার কামারপুকুর ও বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন এবং মঙ্গলবার খাতামধুপুর এবং কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের কৃষকদের লটারী হয়। প্রতিটি লটারী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে লটারী কার্যক্রম সম্পন্ন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম গোলাম কিবরিয়া। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়রা মন্ডল, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহেল আহমেদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবু হাসনাত সরকার, কামারপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম লোকমান, কাশিরাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক চৌধুরী, বাঙ্গালীপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রণোবেশ চন্দ্র বাগচী, বোতলাগাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আল-হেলাল চৌধুরী ও খাতামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ ছাড়াও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা।
লটারী কার্যক্রমে ৫টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার জন্য ৮১২ জন কৃষকের মধ্যে ৭৯৬ জনকে সরকারি খাদ্য গুদামে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রির জন্য নির্বাচিত করা হয়। লটারী না হওয়া বাকি ১৬ জন কৃষককে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহেল আহমেদ।
এ ব্যাপারে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম গোলাম কিবরিয়ার সাথে। তিনি বলেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় লটারীর মাধ্যমে কৃষক নির্বাচিত করা হয়েছে। নিজে উপস্থিত থেকে লটারী কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, চলতি বোরো মওসুমে প্রথম দফায় সরকারি খাদ্য গুদামে কৃষকদের কাছ থেকে ২৩৬ মেট্রিক টন ধান কেনার জন্য বরাদ্দ পায় উপজেলা খাদ্য বিভাগ। ওই বরাদ্দের বিপরীতে ৪৯১ জন কৃষক ধান বিক্রির সুযোগ পায়।