খবর৭১ঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের মামলায় পলাতক ৭৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এদের মধ্যে ৪১ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিনিয়র এসিসট্যান্ট সুপারিনটেন্ডেন্ট সুমন কুমার দাসের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ ঢাকা মহানগর হাকিম মো. সারাফুজ্জামান আনসারী পলাতকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
একই সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কি না এ সংক্রান্তে আগামী ৩০ জুলাই পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেন।
এদিকে একই ঘটনায় চার্জশিট হওয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের চার্জশিটটি বিচারিক আদালত সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দিয়েছে আদালত।
চার্জশিটের এবং মামলার নথির তথ্য অনুযায়ী ১২৫ জন আসামির মধ্যে বিভিন্ন সময় ৪৭ জন গ্রেপ্তার হন এবং তারা সবাই জামিনে রয়েছেন। যাদের মধ্যে ৪৬ জনই প্রশ্নফাঁসের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চার্জশিটের ৭৮ জন পলাতক রয়েছেন। চার্জশিটের বক্তব্য অনুযায়ী আসামিদের মধ্যে অনেক আসামি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মো. হাফিজুর রহমান, মো. ইব্রাহীম, মোস্তফা কামাল ও আইয়ুব আলী বাঁধন। তারাই প্রশ্নফাঁসের মূল হোতা। রিমন হোসেন, তাজুল ওরফে মুকুল, রাকিবুল হাসান এছামী ও অলিপ কুমার বিশ্বাস। এদের মধ্যে ছাপাখানা থেকে প্রশ্নফাঁস সিন্ডিকেটের মাস্টারমাইন্ড নাটোরের সাবেক ক্রীড়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান এছামী। তার সহযোগী খান বাহাদুর, সাইফুল ইসলাম, সজীব ইসলাম, বনি ইসরাইল, আশরাফুল ইসলাম আরিফ, মারুফ হাসান। ডিজিটাল ডিভাইস জালিয়াত চক্রের হোতা বিকেএসপির বরখাস্ত হওয়া ক্রীড়া কর্মকর্তা অলিপ কুমার বিশ্বাস, ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ইব্রাহীম মোল্যা, হাফিজুর রহমান হাফিজ, মাসুদুর রহমান তাজুল, বিএডিসির সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল ও আইয়ুব আলী বাঁধন। আরও আছেন মহীউদ্দিন রানা, আবদুল্লাহ আল মামুন, ইশরাক হোসেন রাফি, ফারজাদ সোবহান নাফি, আনিন চৌধুরী, নাভিদ আনজুম তনয়, এনামুল হক আকাশ, নাহিদ ইফতেখার, রিফাত হোসেন, বায়েজিদ, ফারদিন আহম্মেদ সাব্বির, তানভি আহম্মেদ, প্রসেনজিৎ দাস, আজিজুল হাকিম, তানভির হাসনাইন, সুজাউর রহমান, রাফসান করিম, আখিনুর রহমান অনিক, কদমতলীর ধনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাহাত ইসলাম, জাহিদ হোসেন, হাজারীবাগ শেখ রাসেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আবির ইসলাম নোমান, সুজন, তিতুমীর সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্র আল আমিন, সুফল রায় ওরফে শাওন, সাইদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ ও শেরপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন।
দেশব্যাপী প্রশ্নফাঁসের আলোচিত ঘটনার শুরু ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর। ওইদিন মধ্যরাতে একজন গণমাধ্যমকর্মীর দেওয়া কিছু তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি আবাসিক হলে সিআইডি অভিযান চালিয়ে মামুন ও রানা নামে দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন পরীক্ষার হল থেকে গ্রেপ্তার রাফি নামে ভর্তিচ্ছু একজন শিক্ষার্থী। এরপর ওই দিনই শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়।