খবর ৭১ঃ টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় নির্দেশক চয়নিকা চৌধুরী তাঁর প্রথম চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেছেন। ‘বিশ্বসুন্দরী’ নামের এই ছবির ক্ল্যাপস্টিক দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় মহরত।
মঙ্গলবার ফরিদপুরে শুরু হয় ছবির শুটিং।
২০০১ সালের ১৮ আগস্ট নাট্যপরিচালক হিসেবে যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮টি ধারাবাহিক এবং কয়েক শ একক টেলিভিশন নাটকের নির্দেশক চয়নিকা চৌধুরীর। ১৮ বছর পর আজ মঙ্গলবার চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেছেন তিনি। তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্বসুন্দরী’র শুটিং শুরু হলো। ক্ল্যাপস্টিক দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ছবির মহরত অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার থেকে ফরিদপুরে প্রথম পর্যায়ের চিত্রধারণের উদ্বোধনে আবেগাপ্লুত চয়নিকা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি সংখ্যাতত্ত্বে তেমন বিশ্বাস করি না। এরপরও ভাবতে ভালো লাগছে, ১৮ আগস্ট ২০০১ সালে নাট্যপরিচালক হিসেবে দর্শক প্রথম আমাকে চিনেছিলেন। ১৮ বছর পর ১৮ তারিখেই চলচ্চিত্রের ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। ২০০১ সালের ১৮ আগস্ট দিনটিও ছিল মঙ্গলবার। এবারও মঙ্গলবারই আমার প্রথম চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু হলো। পুরো বিষয়টিই কাকতালীয়।’
চয়নিকা চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ ছবির গল্প, চরিত্র ও শুটিং লোকেশন নিয়ে কাজ করেছি। শুটিং–পূর্ববর্তী কাজে সন্তুষ্ট না হয়ে আমরা কেউই এই স্বপ্নের প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চাইনি। আমি আশাবাদী, সবাই মিলে দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো একটি চলচ্চিত্র উপহার দিতে পারব।’
জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ের শুটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি, ফজলুর রহমান বাবু, মনিরা মিঠুসহ আরও অনেকে। পরবর্তী পর্যায়ে শুটিং এ যোগ দেবেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা, চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ, আনন্দ খালেদসহ অন্যরা। শিল্পী তালিকায় রয়েছে আরও বেশ কিছু চমক।
এ ছবির মাধ্যমে প্রায় আড়াই বছর পর চলচ্চিত্রের ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। তিনি বলেন, ‘“স্বপ্নজাল”-এ অভিনয় করার পর থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ভালো মানের চলচ্চিত্র, মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো চিত্রনাট্য ও চরিত্র না পেলে আর কখনোই চলচ্চিত্রে কাজ করব না। “বিশ্বসুন্দরী” চলচ্চিত্রের “শোভা” চরিত্রটি শুধু আমি নই, যেকোনো অভিনেত্রীর জন্যই বিশেষ কিছু। আশা করি, দর্শক আমার থেকে নতুন কিছু পেতে যাচ্ছে।’
সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড প্রযোজিত ‘বিশ্বসুন্দরী’ চলচ্চিত্রের কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন রুম্মান রশীদ খান।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে নিজের চলচ্চিত্রের নাম ঘোষণা দিয়েছিলেন পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী। প্রথম চলচ্চিত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই সবাই অনুরোধ করছিল। আমি নিজেও চেয়েছি, এমন একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে, যা সব শ্রেণির দর্শকের মন ছুঁয়ে যাবে। দর্শক হাসবেন, কাঁদবেন, প্রেমের অনুভূতিতে ভাসবেন। কেন জানি এত দিন মনমতো গল্প পাচ্ছিলাম না। কারণ, এমন কোনো গল্প চেয়েছি, যা ড্রয়িং রুমের দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহের দিকে নিয়ে আসতে বাধ্য করবে, সেই সঙ্গে যাঁরা নিয়মিত প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ছবি দেখেন, তাঁদের মনের খোরাকও যাতে জোগাতে পারি। আমার অসংখ্য নাটকের নাট্যকার রুম্মান রশীদ খান। বেশ কিছুদিন আগে তাঁর কাছ থেকে একটি গল্প শোনার পর রীতিমতো আমার চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পড়েছে। তখনই মনে হয়েছে, আমি তো এমন গল্পই আসলে খুঁজছি।’
‘বিশ্বসুন্দরী’ ছবির মধ্য দিয়ে কিসের গল্প দর্শককে দেখাতে চান? ‘এই গল্প প্রেমের, এই গল্প মানবতার, এই গল্প জীবনের জয়গানের। সৌন্দর্য যে শুধু বাহ্যিক নয়, সৌন্দর্য হতে পারে মন-মননের—তা শক্তিশালী একটি চিত্রনাট্যের মাধ্যমে এই গল্পে ফুটে উঠেছে। আশা করছি, দারুণ এই গল্পকে আমি আমার দীর্ঘ নির্মাণজীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে চলচ্চিত্রে রং ছড়াতে পারব।’ বললেন চয়নিকা চৌধুরী।