খবর৭১ঃ আধুনিক প্রযুক্তি একদিকে মানুষের জীবনমানের যেমন উন্নতি করেছে তেমনি নিরাপত্তা ঝুঁকিও সৃষ্টি করেছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে প্রযুক্তির ভালোটা গ্রহণ করে খারাপ দিকগুলো থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিটি জিনিসের ভালো ও খারাপ দুটি দিকই থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসের ধরণ বদলাচ্ছে, নতুন প্রযুক্তি যেমন আমাদেরকে উন্নয়নের যাত্রাপথকে সুগম ও গতিশীল করে দেয় তেমনি একইভাবে যারা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, অসামাজিক কাজসহ নানা অপরাধে সম্পৃক্ত তাদের ক্ষেত্রেও নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এসএসএফ অফিসার্স মেসে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) এর ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং সরকার কতৃর্ক ঘোষিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তার জন্য ১৯৮৬ সালে রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনী গঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে এই বাহিনীকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স হিসেবে নতুন নামকরণ করা হয়। বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ ও আনসার বাহিনী থেকে প্রেষণে নিযুক্ত অফিসারদের নিয়ে এসএসএফ গঠিত হয়ে থাকে।
এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং এই বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সবিস্তারে তুলে ধরেন।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, মুখ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সচিব, পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা এবং এসএসএফের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই যুগে মানুষের জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হওয়ায় আমাদের জীবন-মানের উন্নয়ন ঘটছে, জীবনযাত্রাকে অগ্রগামী করছে, উন্নয়নের ধারাকে অগ্রগামী করছে পাশাপাশি নানা ধরনের ঝুঁকিরও সৃষ্টি করছে।’
তিনি এ সময় এসএসএফ সদস্যদের আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠে এই প্রযুক্তিকে যারা মন্দ কাজে ব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘এসএসএফকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। এই বাহিনীতে নতুন নতুন প্রযুক্তির যেমন সন্নিবেশন ঘটাতে হবে সেইসাথে প্রযুক্তির উৎকর্ষের অপরাধের পরিবর্তিত অবস্থা সম্পর্কেও তাদের প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। আর সেইসাথে যেকোনো অবস্থা মোকাবেলার সরঞ্জামাদিও দরকার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাই যখন যেটা প্রয়োজন সেটার আমরা ব্যবস্থা করছি। ক্ষেত্র বিশেষে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েও তা করা হচ্ছে।’ প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘যুগোপযোগী প্রশিক্ষণটা এজন্য সবসময় গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি।’ৎ
প্রধানমন্ত্রী এ সময় মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা, আন্তর্জাতিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রসংগ উল্লেখ করে, দেশি ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্যও অনুষ্ঠানে উপস্থিত এসএসএফ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যারা আমাদের সমর্থন দেয়নি তাদের চক্রান্ত, কুটিলতা, জটিলতা থাকবে। কিন্তু সেগুলো মোকাবেলায় আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিতে হবে এবং সকলে সচেতন থাকবে, সেটাই আমরা চাই।’
এ সময় তিনি মাদকের ভয়াবহতা রোধ কল্পেও সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।