খবর৭১::যৌথ প্রযোজনার পক্ষে কথা বলায় ১৮ সংগঠনের বয়কটের মুখে পড়েন শাকিব খান। এদিকে মিশা সওদাগর সহ কয়েকজনকে বয়কট করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। আর এতেই ফেঁসে গেল আশিকুর রহমানের বিগ বাজেটের থ্রিলার ‘অপারেশন অগ্নিপথ’।
সিনেমাটিতে অভিনয় করছেন শাকিব খান ও মিশা সওদাগর। ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় এ দুই তারকা প্রথম লটের দৃশ্যায়নে অংশ নিয়েছেন। এর কিছু অংশ ইউটিউবে প্রকাশ পেলে বেশ প্রশংসা পায় ছবিটির নির্মান ও পরিচালনা। দুর্দান্ত শাকিব ও ভিন্ন ধারার অ্যাকশন দেখে দর্শকরা বেশ আশাবাদী হয়েছিল ছবিটি নিয়ে। কিন্তু বর্তামানে ছবিটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। পুরো বিষয়টি বর্ণনা করে গত মঙ্গলবার ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট দেন ‘মুসাফির’-খ্যাত নির্মাতা আশিকুর রহমান।
আশিকুর লেখেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে সংকটময় সময় যাচ্ছে বলে আমি মনে করি। একে তো চলচ্চিত্রের ঘোর সংকটকাল, তার উপরে একে অন্যের উপর অভিযোগ, সব মিলিয়ে, সামনের দিনগুলোতে বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্কট আরো গভীর হচ্ছে বলে মনে করি। এই ক্ষেত্রে সবারই চলচ্চিত্রের স্বার্থে কিছুটা পরিশালিত আচরণ কাম্য। তাই এই মুহূর্তে আমার নিজের অবস্থান ও কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চাচ্ছি।
বেশ কয়েক দিন আগে আমাদের সম্মানিত পরিচালক সমিতি চিত্রনায়ক শাকিব খানকে বয়কট করল। তার মানে তার সাথে পরিচালক সমিতির কোনো সদস্যের কাজ করাটা কাম্য নয়। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো— শাকিব খান তো ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর কাজ গত বছর শুরু করেছেন, সামনে আমাদের শুটিং, আমরা কি তাহলে বাকি শুটিংয়ের কাজ করব না? আমরা কি দর্শকদের একটা সুন্দর চলচ্চিত্র উপহার দিতে পারব না? আমি একটা কথা নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে চাই, অগ্নিপথে শাকিব খানের অভিনয়, এই চলচ্চিত্রটিকে অন্য এক জায়গায় নিয়ে যাবে আশা করি। দর্শক কি তাহলে শাকিব খানের এই অভিনয় দেখতে পারবে না? আমাদের পুরো টিম একটা সুন্দর বাংলাদেশি চলচ্চিত্র উপহার দিতে চাচ্ছি, এটা তো আমাদের দোষ না। অগ্নিপথের জন্য প্রযোজক, ক্রু, আর্টিস্ট সবাই যে পরিশ্রম করেছে এবং করছে তার মূল্য কি এটা? উল্লেখ্য অগ্নিপথ এই মুহূর্তে বাংলাদেশের একক প্রযোজনায় সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র। সম্মানিত চলচ্চিত্র পরিবারের কাছে আমার বিনীত প্রশ্ন, যৌথ প্রযোজনা নিয়ে আন্দোলনের শাস্তি কি তাহলে দেশি সিনেমা পাবে? অগ্নিপথের টিম, দর্শক আমরা তো কোনো দোষ করিনি। আমার প্রশ্নের উত্তর জানার অপেক্ষায় থাকলাম।”
মিশা সওদাগর প্রসঙ্গে লেখেন, “আজ নিউজ দেখলাম, প্রদর্শক সমিতি মিশা সওদাগরকে নিষিদ্ধ করেছে। তার মানে আমাদের অগ্নিপথের শুটিং মিশা সওদাগরকে বাদ দিয়ে করতে হবে। এরূপ পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে আমরা যদি সেটা করি, তাহলে এই কথা আমি ১০০% নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি, বাংলাদেশের মানুষ বাংলা চলচ্চিত্রের অসাধারণ এক অভিনয়ের অভিজ্ঞতা মিস করবেন। মিশা সওদাগর যে অভিনয় আমাদের সেখানে দিয়েছেন, সেটা দেখাতে না পারলে, অপূরণীয় এক ক্ষতি হিসাবে দর্শকদের মনে প্রশ্ন হিসাবে থেকে যাবে।”
তিনি আরো বলেন, ‘বয়কট কোনো সমস্যার সমাধান নয়। বয়কটের মাঝখানে পড়ে আমাদের মতো নতুনদের ক্ষতি আশা করি আপনারা কেউই চান না। আপনারা বড় মানুষ, গুণীজন, আমাদের মতো তরুণদের উপর এমন কোনো দাবি চাপিয়ে দেবেন না, যেন আমরা অভিমান করে চলচ্চিত্র, ইন্ডাস্ট্রি, দেশ ছেড়ে চলে যাই। কারণ এক তরুণকে দেখেই আরেক তরুণ অনুপ্রাণিত হয়ে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আসবে। এবং তরুণদের ছাড়া একটা ইন্ডাস্ট্রি চলতে পারেন না। কারণ চলচ্চিত্রের সোনালি সময়ে আপনারা ও তরুণ ছিলেন। আমরা আপনাদেরই পথ অনুসরণ করে এসেছি। চলচ্চিত্রের এই ইন্ডাস্ট্রিতে সবাইকেই সবার প্রয়োজন। সবারই এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক অবদান আছে। শান্তি পূর্ণ সমাধান হলে, সেটা ইন্ডাস্ট্রিরই মঙ্গল। তা না হলে সামনে ধ্বংস ছাড়া এর কিছু দেখার থাকবে বলে আমি মনে করি না।’
খবর৭১/এস: