খবর৭১ঃটাকার বিপরীতে ডলারের মান শক্ত অবস্থানে থাকলেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ১০ শতাংশ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশিরা ১৩ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একইসময়ে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার।
চলতি বছরের এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছে ১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। মার্চ শেষে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। ২০১৮ সালের এপ্রিলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এপ্রিলে রেমিট্যান্স বেড়েছে দশমিক ১০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা আশা করছেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মে মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছাবে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে ডলারের বিপরীতে টাকার মানের অবমূল্যায়ন কমে যেতে পারে।
অপরদিকে, আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে ডলারের অধিক চাহিদার কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ডলারের দাম বেড়েছে ৫৫ পয়সা।
২৯ এপ্রিল পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা প্রতি এক ডলারের দাম ছিল ৮৪ দশমিক ৪৫ টাকা। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি এক ডলার বিক্রি হয়েছে ৮৩ দশমিক ৯০ টাকায়। গত বৃহস্পতিবার (০২ মে) পর্যন্ত ৮৪ দশমিক ৪৫ টাকা অপরিবর্তিত ছিল ডলারের দাম।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, ঈদের আগে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স গ্রহীতাদের জন্য আমরা বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সেবা দেওয়া শুরু করেছি।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি ঈদের আগে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ দেড় বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এক হাজার ২০০টিরও বেশি শাখার মাধ্যমে বাংলাদেশের ২৯টি মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে দেশে পাঠানোর কাজ করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহী করতে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রেমিট্যান্স বাড়ানোর কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারের কাছে একটি সুপারিশপত্র জমা দেওয়া হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তারা।
প্রবাসে কষ্টার্জিত অর্থ বৈধভাবে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে দেশে পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক খুব শিগগির একটি ধারাবাহিক পদক্ষেপ নেবে। এতে অবৈধপথে অর্থ আসা বন্ধ হলে বাড়বে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিকল্প নেই। আমরা চেষ্টা করছি, কীভাবে প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী করা যায়।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সরকারের কাছে একটি সুপারিশপত্র তুলে ধরা হবে। পরবর্তীতে সেই সুপারিশের আলোকে কাজ করা হবে। এতে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়বে বলে আশা করছি।
খবর৭১ /জি