খবর৭১ঃ বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরের বাকি আর মাত্র ৩৮ দিন। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে বাসতে যাওয়া এবারের আসরটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ আসর। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে সর্বপ্রথম অংশ নেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এরপর থেকে প্রতিটি বিশ্বকাপেই অংশ নিয়ে নিজেদের প্রমাণ করে চলছে লাল-সবুজ জার্সি ধারীরা।
আসন্ন বিশ্বকাপ ১৯৯২ বিশ্বকাপের আদলে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল একে অপরের সঙ্গে ম্যাচ খেলবে। বিশ্বকাপ মঞ্চে বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় খেলায় মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ডরে। ৫ জুন ইংল্যান্ডের ওভাল ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মাঠে গড়াবে দিবা-রাত্রির ম্যাচটি।
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে সর্বমোট ২৯ বার। যার মধ্যে ২৪টি ম্যাচই জয় পেয়েছে কিউইরা। বাকি পাঁচ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ দল। বিশ্বকাপ মঞ্চে চার বারের দেখায় সবগুলো ম্যাচই জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
দুই দল সর্বপ্রথম মুখোমুখি হয় ১৯৯০ সালের ২৮ এপ্রিল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচটি। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান করে কিউইরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্দিষ্ট ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ এর বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। এতে ১৬১ রানের বিশাল জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
সবশেষ দুই দলের সাক্ষাত হয় চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি। তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজে টাইগারদের আথিতিয়তা দেয় কিউইরা। সেই সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে খালি হাতেই ফিরতে হয় মাশরাফি বাহিনীকে। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ৮৮ রানে হারায় স্বাগতিকরা।
প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে তিন অর্ধশতকে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রানের বিশাল টার্গেট ছুঁড়ে দেয় নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৪৭.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪২ রানে গুটিয়ে যায় সাফরকারিরা। বাংলাদেশের পক্ষে সাব্বির ১০২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি টাইগারদের।
এদিকে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ দল। ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের সপ্তম আসরের সেই ম্যাচে টাইগারদের ৬ উইকেটে হারায় নিউজিল্যান্ড। চেমসফোর্ডের কাউন্টি গ্রাউন্ড অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে প্রথমে ব্যাট করে ৩৭.৪ ওভার ১১৬ করে বাংলাদেশ দল। জবাবে ৩৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড।
দল দু’টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বারের মত মুখোমুখি ২০০৩ সালে। দক্ষিণ আফ্রিকার ডি বিয়ার্স ডায়মন্ড ওভালের ম্যাচটিতেও হারতে হয় টাইগারদের। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। বিশ্ব আসরের ম্যাচটিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৮ তুলতে সক্ষম হয় লাল-সবুজ জার্সি ধারীরা। ছোট টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩৩.৩ ওভারে মাত্র ৩ উইকেটের বিনিময়ে জয় নিশ্চিত করে নিউজিল্যান্ড।
বিশ্বকাপের নবম আসরে ফের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড। ২০০৭ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত খেলা বাংলাদেশ দল সুপার এইট পর্বে গিয়ে নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়। সে সাথে বিশ্বকাপ শিরোপার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় টাইগারদের। বারমুডার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ দল। প্রথমে ব্যাট করে ৪৮.৩ ওভারে সব কয়টি উইকেটের বিনিময় ১৭৪ রান সংগ্রহ করে সাকিব-তামিম-মুশফিকরা। জবাবে ২৯.৩ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলে নিউজিল্যান্ড। এতে বিশ্বকাপের শেষ চারও নিশ্চিত হয় কিউইদের।
২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে আথিতিয়তা দেয় নিউজিল্যান্ড। ঘরের মাঠে ৩ উইকেটে হারায় টাইগারদের। সেডন পার্কে অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বে দুই দলের শেষ ম্যাচে ২৮৮ রান তুলে বাংলাদেশ দল। সবকয়টি ওভার খেলে ৭ উইকেট খোয়ায় টাইগাররা। জয় তুলতে সেদিন বেশ ঘাম ঝরাতে হয় কিউইদের। ৪৮.৫ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে জয়ের দেখা মিলে নিউজিল্যান্ডের। কিউইদের সাথে হারলেও আগে থেকেই কোয়াটার ফাইনাল নিশ্চিত ছিলো মাশরাফি বাহিনীর।
দুই দলের চারবারের বিশ্বকাপ সমিকরণে বলছে চারবারই আগে ব্যাট করে হেরেছে বাংলাদেশ দল। তবে অন্য যেকোনো বিশ্বকাপের তুলনায় এবারের বাংলাদেশ স্কোয়াড বেশ ব্যালেন্স। তাই যেকোন মুহূর্তে অঘটন গঠিয়ে দিতে পারে সাকিব-তামিমরা।