কারাগারে বিদেশি বন্দি ৪৯৫ জন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0
503

খবর৭১ঃ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, বর্তমানের দেশের বিভিন্ন কারাগারে বিভিন্ন দেশের ৪৮৫ জন বন্দি রয়েছেন। এদের মধ্যে ৮৬ জন মুক্ত হলেও কোনো দেশ তাদেরকে নিতে রাজি হয়নি। এর ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা কারাগারে রয়েছেন।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান। ‘কমবেটিং ট্র্যাফিকিং ঃ রিপেট্রিশেন অব ভিকটিমস অব ট্র্যাফিকিং’- শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীজুড়ে যুগ যুগ ধরে জোর করে মানবপাচারের ইতিহাস রয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে এখন জোর করে নয়, প্রলুব্ধ করে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে তারা ভিকটিম হচ্ছে, অনেকে বিভিন্ন দেশে আটকে রয়েছেন।

বাংলাদেশের কারাগারেও ৪৯৫ জন বিদেশি আটকে রয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এদের মধ্যে ৫৭ জন কনভিকটেড। ৮৬ জন মুক্ত হলেও তাদেরকে কোনো দেশ নিতে আসছে না, ফলে বাধ্য হয়েই তারা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাইয়ের কারণে মানবপাচার হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মানুষ পাচার করা হয়। তবে এখন প্রলোভিত হওয়া মানুষদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে আসছে। অমরা এখন একটি ভালো জায়গায় আছি। অনেকে এখন বাংলাদেশে আসছেন নিজেদের ভাগ্য বদলানোর জন্য। বাংলাদেশ থেকে মানবপাচারের ফিগার অনেক কমেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের প্রতিটি জেলায় মানবপাচার রোধে পুলিশের কমিটি রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হয়। এছাড়া বর্ডার এলাকায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকেই বাংলাদেশে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক এ অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে রয়েছেন। তাদের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ বেঁচে থাকা।

২০১৫ সালে নৌকায় করে বিদেশে যাওয়ার জন্য যারা চেষ্টা করছিলেন, যে ঘটনাটি অনেক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, তখনকার বেশিরভাগই ছিলেন রোহিঙ্গা নাগরিক। এখনো যারা নৌপথে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছেন তাদের ৮০ ভাগই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী।

বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে দেশে আসার পরও মুক্তি না পাওয়া বাদল ফরাজির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের আদালতে বিনা অপরাধে বাদল ফরাজীকে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ঘোষণার পর বাংলাদেশে আনা হলেও তিনি এখনও কারাগারে বন্দি। কিন্তু বাদল ফরাজির বিষয়ে একটি জটিলতা রয়েছে। এখন মাত্র একটাই পথ খোলা রয়েছে। রাষ্ট্রপতি যদি ক্ষমা করেন তাহলে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম বাংলাদেশের প্রধান গিওরগি গিগাউরি, সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, অ্যাটসেক ইন্ডিয়ার ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর মানব্রেন্দ্র নাথ মন্ডল, নাথ মন্ডল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here