ঢাকার রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পুলিশ প্রশাসনসহ সবাই ব্যর্থ হয়েছি: ডিএমপি কমিশনার

0
414

খবর৭১ঃ ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন যে ঢাকার রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পুলিশ প্রশাসনসহ সবাই ব্যর্থ হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি দুর্ঘটনা এড়াতে পথচারীদেরকেও সতর্ক করেন।
আজ (২১ মার্চ) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ট্রাফিক সচেতনতামূলক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “অস্বীকার করার কোনো পথ নেই- ঢাকা শহরে পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। আমি কারো ঘাড়ে দোষ দিবো না। কিন্তু, অভারঅল বলবো ঢাকা শহরে পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এবং এই ব্যর্থতার দায়ভার আমরা কেউ এড়াতে পারি না। এই দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।”
গতবছরের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের রেষারেষিতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুজন শিক্ষার্থী নিহত হওয়া এবং গত ১৯ মার্চ রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কাছে নর্দ্দায় সুপ্রভাত বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন তিনি।
বলেন, “এটি কাম্য হতে পারে না। এটি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে আমরা এই পরিবহনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পারি নাই। (তাদেরকে) নিয়মের মধ্যে আনতে পারি নাই।”
এসময় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া অতিথিদের উদ্দেশ্যে প্রশ্নও রাখেন ডিএমপি প্রধান। বলেন, “সবচেয়ে দুর্ভাগ্য- এই বাসটির (সুপ্রভাত) রুট পারমিট ছিলো ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া (মহাসড়কের)। তাহলে ঢাকা শহরে বাসটি চললো কেনো? এই বাসটির বিরুদ্ধে ২৭ বার প্রসিকিউশন দেওয়া হয়েছে। এরপরও বাসটি চলে কেমনে? দুর্ঘটনাটি ঘটেছে জেব্রা ক্রসিংয়ের ওপরে। জেব্রা ক্রসিং হচ্ছে পথচারীদের জন্যে নিরাপদ জায়গা। নিরাপদ এলাকায় যখন দুর্ঘটনা হয় তার আর কোনো জবাব থাকে না।”
“আমি আমার (বাস) মালিক-শ্রমিক ভাইদের এর জন্যে দায়ী করবো না। এর জন্যে দায়ী আমরা সবাই। এই দায়ভার, এই ব্যর্থতা আমরা কেউ এড়াতে পারি না। সুতরাং, চূড়ান্ত সময় এসেছে। এই পরিবহন (ব্যবস্থাকে) একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা।”
তিনি মনে করেন, “(রাজধানীতে) ছাত্র মারা গিয়েছে তাই আমাদের টনক নড়েছে। সারাদেশে প্রতিদিন সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে। একজন চালক যখন দৈনিক চুক্তিতে ভাড়া নেয় তার একটি অতিরিক্ত ট্রিপ দেওয়ার জন্যে এই দৌরাত্য সৃষ্টি হয়। সে রাস্তার মাঝখানে গাড়ি দাঁড় করায় যাতে অন্য পরিবহনের গাড়ি তাকে অতিক্রম করে যেতে না পারে। এর ফলে যান চালাচলের মূল প্রবাহটি বন্ধ হয়ে যায়।”
“বেশি টাকা আয় করার এই প্রবণতা চালকের মাথার ভেতরে ঢুকে যায় এটি হলো আমাদের সব দুর্ঘটনার অন্যতম একটি কারণ। এই বিশৃঙ্খলার জন্যে প্রথম দায়ী হলো ঢাকা শহরের এই বাসগুলো চুক্তি-ভিত্তিক চলে।”
একই সঙ্গে তিনি পথচারীদের সতর্ক করেন। বলেন, “জনগণ যাতে ফুটওভার ব্রিজে উঠে, জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করে- এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যে আমি ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগকে আমি নির্দেশ দিচ্ছি। তা না হলে এই জনগণকে আটক করেন।”
কমিশনার আরও বলেন, “বাস যেমন আটক হবে, পথচারীও তেমনি আটক হবে। এটা মিডিয়াকে দেখান- দেশের মানুষ জানুক যে ফুটওভার ব্রিজ ও জেব্রা ক্রসিং ব্যতীত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কানে মোবাইল ফোন নিয়ে রাস্তা পেরিয়ে দুর্ঘটনার কারণ হবো আর দোষ হবে বাস চালকের, এটা হতে পারে না।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here