চৌগাছায় এসএম হাবিব সমার্থকদের উপর বোমা হামলার অভিযোগ আটক-৩

0
341

মুুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)ঃযশোরের চৌগাছায় উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম হাবিবুর রহমানের সমর্থকদের লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হামলায় তার তিনজন কর্মী আহত হয়েছে। এ সময় উত্তেজিত জনতা হামলাকারীদের ধাওয়া করলে একটি ওষুধের দোকানে তারা আশ্রয় নেয়। জনতা ওষুধের দোকান বন্ধ করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই সন্ত্রাসীদেরকে আটক করে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নের আফরা মোড়ে। এ ঘটনায় আওয়ামীলীগের উভয় গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ৯ দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম হাবিবুর রহমানের আনারস প্রতীকের কর্মী সমার্থকরা উপজেলার আফরা মোড়ে একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় একই গ্রামের রফিউদ্দীনের ছেলে নৌকা প্রতীকের সমর্থক সাইদুর রহমান পান্নু, মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে মোরশেদুল ইসলাম ও মোতালেব হোসেনের ছেলে রেজাউল ইসলামসহ ১০/১২ জন সন্ত্রাসী ওই চায়ের দোকানে ঢুকে তাদের হুমকি দেয়। হুমকি দেবার পরও আনারস প্রতীকের লোকজন চায়ের দোকানে অবস্থান করছিলেন। কিছু সময় পর রমজান বিশ্বাসের ছেলে কামাল হোসেন দোকানের বাইরে বের হলে তাকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা করে। কিন্তু কামাল হোসেন অল্পের জন্য রক্ষা পান। সঙ্গে সঙ্গে আনারস প্রতীকের সমর্থকরা চিৎকার দিয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে সন্ত্র্রাসীরা আরো দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলায় আহত হয় আনারস প্রতীকের সমর্থক আফরা গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাসুম (৩২), মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালামের ছেলে মহিনুর আলী (৪৫) নেপাল গাজীর ছেলে শহিদুল ইসলাম। উত্তেজিত জনতার ধাওয়ায় হামলাকারীরা ঘটনাস্থলের পাশেই একটি ওষুধের দোকানে ঢুকে পড়ে। জনতা দোকানটি ঘিরে রেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পাশাপাশি সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুল আলমও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। খবর পেয়ে রাতেই যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী (ক সার্কেল) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। স্থানীয়রা জানান, রাত ১ টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। রাতেই বোমা হামলার অভিযোগে সাইদুর রহমান পান্নু, মোরশেদুল ইসলাম ও রেজাউল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ ওই ওষুধ দোকানে ব্যাপক তল্লাসি চালায় তবে সেখান থেকে কোন কিছু উদ্ধার হয়নি জানা গেছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বোমা হামলায় আহতরা বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমানের সমর্থক। অপর দিকে হামলাকারীরা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ মোস্তানিছুর রহমানের সমর্থক। সংশ্লিষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী ও তার অনুসারীরা নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন। অপরদিকে একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মান্নান ও তার অনুসারীরা আনারস প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের গ্রুপিং দীর্ঘ দিনের হলেও আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে তা প্রকাট আকার ধারন করেছে। ফুলসার ইউনিয়নের মত গোটা উপজেলা আওয়ামীলীগ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় দুই গ্রুপের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা করছেন উপজেলাবাসি।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি মাসুদ চৌধুরী জানান, ঘটনাটি সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক। বোমা ফাটানোর কোন ঘটনা ঘটেনি। সেখানে বাজি ফুটেছে। নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেই এ ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জানান, পরিকল্পিতভাবে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। যারা হামলাকারী তারা এলাকায় সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্নিত। বোমা হামলায় ৩ জন আনারস প্রতীকের সমর্থক আহত হয়েছে। তারা সকলে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
থানার ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার বিশ্বাস জানান, পরিস্থিতি এখন পুলিশের অনুকুলে। এলাকা শান্ত আছে। আমরা তল্লাসি করেছি কিন্তু কোন অস্ত্র পাওয়া যায়নি। বোমা হামলাকারী ৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here