খবর ৭১ঃ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কিছু পেতে হলে ত্যাগ করতে হয়। আত্মত্যাগ ছাড়া কোনো কিছু অর্জন সম্ভব না। ১৯৪৮ সাল থেকে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সে আন্দোলনের শেষ পরিণতি হিসেবে পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ। এর পেছনে রয়েছে লাখ লাখ মানুষের আত্মত্যাগ।’
৮ মার্চ, শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ: রাজনীতির কবির অমর কবিতা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি ট্রাস্টটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
সেমিনারে রাজনীতিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যক্তি জীবনে আমি কী পেলাম আর কী পেলাম না—এ হিসাব করলে চলবে না। রাজনীতিতে এসেছেন দেশের মানুষের সেবা করতে। মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম সেটাই বড় কথা; যা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়ে গিয়েছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতিকে ধাপে ধাপে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঞ্চনা থেকে মুক্তি পেতে করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা ছিল ৭ মার্চের ভাষণে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে অনেকে অনেক রকম ব্যাখ্যা দেন। তখনকার ছাত্রনেতা এখন যারা জীবিত আছেন, আমি আজকেও একজনের ইন্টারভিউ দেখছিলাম। সেখানে কেউ নানাভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে দিচ্ছেন। আসলে এই ব্যাখ্যাগুলো শুনলে হাসি পায় যে এরা আসলে কতটা অর্বাচীনের মতো কথা বলে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) নাকি নিউক্লিয়াসের সঙ্গে আলোচনা করলেন ভাষণে এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম—এখানে মুক্তির সংগ্রাম আগে বলবে না স্বাধীনতার সংগ্রাম আগে বলবে সেটাও নাকি নিউক্লিয়াস আলোচনা করেছে। এগুলো সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যা কথা। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
‘এই যে একেকজন একেকটা ব্যাখ্যা দেন, আসলে তো তা নয়। হ্যাঁ, ভাষণে যাওয়ার আগে অনেকেই দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন, অনেকে অনেক পয়েন্ট তৈরি করেছেন, অনেকে বলেছেন এটা বলতে হবে, ওটা বলতে হবে, এভাবে বলতে হবে, সেভাবে বলতে হবে, এটা না বললে হতাশ হয়ে ফিরে যাবে। নানা ধরনের কথার মধ্যে আমরা জর্জরিত ছিলাম। কাগজে কাগজে অনেক কাগজ আমাদের বাসায় জমা হয়েছিল। শেষ কথা বলেছিলেন আমার মা। যে কথাটি আমি সবসময় বলি। আমার মা একটা কথাই বলেছিলেন—“সারাটা জীবন তুমি সংগ্রাম করেছো, তুমি জানো বাংলাদেশের মানুষ কী চায় এবং তার জন্য কী করতে হবে। তোমার থেকে ভালো আর কেউ জানে না। কাজেই তোমার মনে যে কথাটা আসবে, তুমি শুধু সেই কথাই বলবে আর কোনো কথা না”।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ভাষণে দেখবেন, এখানে কোনো পয়েন্ট নাই, কোনো কাগজ নেই। কারণ, তিনি তো সংগ্রাম করে গেছেন সেই ১৯৪৮ সাল থেকে। তখন থেকেই তিনি বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। স্বাভাবিকভাবেই তিনি জানেন মুক্তির পথটি কোথায়, কীভাবে আসবে। তিনি যেসব ব্যবস্থা করে গেছেন, সেটাও তিনি জানেন। সেভাবেই তিনি নির্দেশনা দিয়েছিলেন, যা বাঙালি জাতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে।’