খবর ৭১ঃ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধংদেহী অবস্থান সৃষ্টি হলেও তা পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নেয়ার কোনো আশঙ্কাই দেখছেন না পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ। তিনি মনে করছেন এমন লড়াই হলে তাতে ব্যবহার করা হবে না পারমাণবিক অস্ত্র। গত শুক্রবার তিনি দুবাইয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এমন কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গালফ নিউজ।
পারভেজ মোশাররফ বলেছেন, যদি প্রতিবেশী এই দুটি দেশের মধ্যে কোনো যুদ্ধ হয়ই তাতে পারমাণবিক বোমার ব্যবহার হবে এমনটা বলা উদ্ভট এক ব্যাপার। পাকিস্তান যদি একটি বোমা ফেলে। তাহলে ভারত ফেলবে ২০টি। এক্ষেত্রে পাকিস্তানকে ব্যবহার করতে হবে ৫০টি বোমা। বিষয়টি হবে বিপর্যয়কর।
যেসব মানুষ এমন যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে কথা বলছেন তাদের যুদ্ধ বিষয়ক কোনো ধারণাই নেই বলে মনে করেন তিনি।
পারভেজ মোশাররফ বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র অপূরণীয় ক্ষতি করে। কারো পক্ষেই এটা ব্যবহার করা উচিত নয়। তিনি স্বীকার করেন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। বিশেষ করে তা গত ১০ মাসে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে।
উল্লেখ্য, নির্বাসিত পাকিস্তানের সাবেক এই স্বৈরশাসক গঠন করেছেন অল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এপিএমএল) দল। এ দলের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হিদায়েতুল্লাহ খেসগি এবং সাধারণ সম্পাদক মেহরিন মালিককে সঙ্গে নিয়ে তিনি ওই সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে ঘোষণা দেন, পাকিস্তান এবং দেশের বাইরেও তিনি তার দলকে পুনর্গঠন করবেন এবং আগামী নির্বাচনের আগেই রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করবেন।
পারভেজ মোশাররফ বলেন, নওয়াজ শরীফের পিএমএলএন এবং আসিফ আলী জারদারির পিপিপির পর ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের (পিটিআই) উত্থান ঘটেছে পাকিস্তানে তৃতীয় শক্তি হিসেবে। কারণ, প্রথম দুটি দলই দুর্নীতিবাজ। ওই দল দুটির প্রধানরা দুর্নীতির অভিযোগের মুখে। এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে সুবিধা নেয়ার ঘোষণা দেন পারভেজ মোশাররফ এবং বলেন, দেশে নতুন করে যাত্রা শুরু করবে তার দল।
পারভেজ মোশাররফের বয়স এখন ৭৫ বছর। ওই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার সময় তার কণ্ঠকে বেশ দুর্বল ও ভাঙা মনে হচ্ছিল। দীর্ঘদিন পর তিনি সংবাদ সম্মেলন করলেন। তিনি ২০১৬ সাল থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে রয়েছেন দুবাইয়ে। তার বিরুদ্ধে দেশে রয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। কারণ, তিনি ২০০৭ সালে সংবিধান স্থগিত করেছিলেন স্বীয় স্বার্থের জন্য। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানে আরো কিছু মামলা আছে। তিনি চিকিৎসার কথা বলে দেশ ত্যাগ করেছিলেন। এ জন্য তিনি আদালত থেকে বিশেষ অনুমোদ নিয়েছিলেন। কিন্তু দেশের বাইরে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেন নি।
দেশে ফেরা নিয়ে পারভেজ মোশাররফ বলেছেন, পাকিস্তানের পরিবেশ এখন উপযুক্ত। তাই তিনি সহসাই দেশে ফেরার পরিকল্পনা করছেন। তিনি আরো বলেছেন, এখন ইমরান খান সরকারে যেসব সিনিয়র কর্মকর্তা ও মন্ত্রীরা রয়েছেন তাদের অনেকে তার অধীনে কাজ করেছেন এবং তারা তাকে দেশে ফিরতে সাহায্য করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তবে কবে নাগাদ তিনি ফিরবেন তা বলেন নি।
খবর ৭১/ইঃ