খবর ৭১ঃ
সম্প্রতি রোহিঙ্গা মুসলিমদের পর রাখাইন থেকে প্রায় দুই লক্ষাধিক বৌদ্ধ ও অন্যান্য উপজাতিদের বের করে দেয়া হয়েছে। এদের অনেকেই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অনেকেই প্রবেশের জন্য সীমান্তে অপেক্ষা করছে। তাদেরকে প্রবেশের সুযোগ দিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত খুলে দেয়ার জন্য ঢাকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর)।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেসিক এ আহ্বান জানান।
ইউএনএইচসিআর বিবৃতির মাধ্যমে মিয়ানমারে সম্প্রতি শুরু হওয়া সহিংসতার কারণে দেশটিতে যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে তার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারা এমন বিপর্যয় পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ সরকারের সাহায্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও জানায়।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেসিস বলেন, মিয়ানমারের ওসব রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা শুরু ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সহিংসতার কারণে অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছে। সেখানে অনেকে গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং এদের একটি অংশ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা বান্দরবানে পৌঁছেছে নতুন করে যে মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিয়ানমারে শুরু হওয়া সহিংসতার কারণে যেসব মানুষ আশ্রয়ের জন্য যাচ্ছে, তাদের প্রবেশের অনুমতি দিতে বাংলাদেশ সরকারকে সব রকমের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত জাতিসংঘ।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র বলেন, গত ২০১৭ সালের আগস্টে শুরু হওয়া মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিমুখে এখন পর্যন্ত যে ৭ লাখ ২০ হাজার শরণার্থী বাংলাদেশে এসেছেন, তাদের গ্রহণের ক্ষেত্রে ঢাকার সরকারের উদারতা ও নেতৃত্বের জন্য ইউএনএইচসিআর কৃতজ্ঞ। এখন যেসব মানুষ মিয়ানমার থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়ে আসছে তাদের গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের মুখে রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা মুসলিমরা। সর্বশেষ ২০১৭ সালের আগস্টের পর ওই রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নারী–পুরুষ। আগে ও বর্তমান মিলিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন ১১ লাখের বেশি। শিক্ষা, বাসস্থান, কর্ম, ভ্রমণ, ভোট ও স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রায় সকল মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।