চৌগাছায় ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতাসহ সকল সুবিধা বন্ধ

0
544

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর)প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডারসহ ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে। দুই বছরের বেশী সময় ধরে ভাতাসহ সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় দূর্বিসহ জীবন যাপন করছেন পরিবার গুলো। এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। ভাতা প্রদানের জন্য ভূক্তভোগীরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মামনীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করেন। একই সাথে উদ্দেশ্যমূলক হয়রাণি করার প্রতিবাদে নব্য আওয়ামীলীগ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানানো হয়।
সোমবার দুপুরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাবেক ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার শওকত আলী লিখিত বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলে তারা দেশপ্রেমিক নয়। এই সম্মান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি বলেন ২০১৬ সালে নব্য আওয়ামীলীগ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধার নামে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের ফলে মুক্তিযোদ্ধা আঃ আলিম, সামসুল আলম, শফিয়ার রহমান, নূর ইসলাম, লিয়াকত আলী, মুজিবর রহমান, অহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, চকম আলী, নূর হোসেন, মতিয়ার রহমান, ইউছুপ আলী, নুরু মিয়া, আশরাফ আলী, শওকত আলী, রমজান আলী, আবুল কাশেম, ওমর আলী, শাহাজান আলী, এ কে এম সাজেদুর, মোঃ জেকের আলী, মোহাম্মদ আলী, মোঃ নূর ইসলাম, মোঃ বাহারাম উদ্দীন, মোঃ কেরামত আলী, আলী আহম্মদ ও মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের লোকজন মন্ত্রনালয়ে হাজির হয়ে তাদের স্বপক্ষে প্রমানাদি হাজির করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়কাল স্মৃতি বর্ণনা করেন। তারপরও তাদের ভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্ট প্রথম পর্যায় মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী, চকম আলী, আশরাফ আলী, আলী আহম্মেদ, সামসুল আলম ও রমজান আলীর বিষয়ে ভাতা প্রদান ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বকেয়াসহ প্রদানের নির্দেশনা দেন। তারপরও তাদের ভাতা এখনো পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, আব্দুস সালাম ভিন্ন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন,বর্তমানে তিনি আওয়ামীলীগ করছেন। ২০০২ সালে বিজয় দিবসের দিন মুক্তিযোদ্ধা সংসদে রক্ষিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি নামিয়ে ফেলে তা ভেঙ্গে ফেলা হয়। বিগত দিনে ৭ই মার্চের ভাষণও বন্ধ করা হয়েছে। এসব অন্যায় আমরা কখনো মেনে নিতে পারিনি বরং প্রতিবাদ করেছি। সাবেক ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার আরো অভিযোগ করেন, অভিযোগের ফলে ভাতা বন্ধ হয়েছে, এখন বহুবিতর্কিত ওই নেতা (আব্দুস সালাম) আমাদের বলছে, টাকা দিলে অভিযোগ তুলে নেবেন। ইতোমধ্যে তিনি ৭ জন ভূক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং আরো মোটা অংকের টাকা দাবী করছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাবেক কমান্ডার ডাঃ নূর হোসেন বলেন, আমরা আওয়ামীলীগের সাথে ছিলাম আছি থাকবো। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। আজ আমাদের সত্য-মিথ্যা প্রমাণ দিতে হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। মরহুম মুক্তিযোদ্ধা চকম আলীর ছেলে মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমরা অতিকষ্টে জীবন যাপন করছি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে আজ আমরা বড় অসহায়। ভূক্তভোগীরা এ সময় ভাতা চালু করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। একই সাথে মুক্তিযোদ্ধার সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা করার অন্যতম বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও দাবী জানান। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় ভূক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোন অভিযোগকারী নই। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ে এলাকার ৪০ জনের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছিল ২৬ জনের বিরুদ্ধে। সেখানে আমার কোন ভূমিকা নেই। টাকা নেয়া ও অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে বলেন, অভিযোগগুলো সত্য নয়।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here