0
351

শামীম পানি সম্পদ উপমন্ত্রী হওয়ায় শরীয়তপুরে
আনন্দের বন্যা: শত শত মণ মিষ্টি বিতরণ
(১ ও ২নং ছবিসহ)
শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীমকে পানি সম্পদ উপ মন্ত্রী ঘোষণা করায় আনন্দে ফেটে পড়েন সমগ্র শরীয়তপুরের আওয়ামীলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী সহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। এ খবরে বরিবার ও সোমবার নড়িয়া-সখিপুর সহ সমগ্র শরীয়তপুরের বিভিন্ন উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, হাট- বাজার, মহল্লা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আনন্দ মিছিল ও শত শত মণ মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্র জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে শরীয়তপুর জেলায় কোনো মন্ত্রী নেই। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবদুর রাজ্জাককে মন্ত্রী বানানো হয়। তখন তিনি ২০০১ সাল পর্যন্ত পানি সম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এর দীর্ঘ ১৯ বছর পর উপমন্ত্রীর পদ পেলেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জাকসু’র সাবেক ভিপি এনামুল হক শামীম। এ খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ শরীয়তপুর জেলার মানুষ আনন্দে আপ্লুত হয়ে পড়ে। এ দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-২ আসন থেকে (দুই লাখ ৭৩ হাজার ৩৭১ ভোট পেয়ে) বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম। সংসদ সদস্যের স্বাদ গ্রহণ করতে না করতেই হয়ে গেলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী।
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক জহির সিকদার ও নড়িয়া পৌরসভার মেয়র মো. শহিদুল ইসলাম (বাবু রাড়ী) বলেন, জেলায় একজন মন্ত্রীর প্রয়োজন ছিল। বড় প্রকল্পের উন্নয়ন করতে মন্ত্রীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন। এ অঞ্চলের অভিভাবক এনামুল হক শামীম বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা নতুন প্রজন্মের নেতা এনামুল হক শামীমকে উপমন্ত্রী পদ দিয়েছেন। এ জন্য জননেত্রীর শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সখিপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির মোল্যা ও সাধারণ সম্পাদক মানিক সরকার বলেন, অবহেলিত শরীয়তপুরকে উন্নয়নের রোল মডেল করার ঘোষণা দিয়েছেন এনামুল হক শামীম। তিনি একটি সমৃদ্ধ শরীয়তপুর বিনিমার্ণে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন এনামুল হক শামীম। দীর্ঘদিন পরে হলেও শরীয়তপুরে একজন মন্ত্রী করায় আমরা আনন্দিত ও খুশি। এর আগে তিনি এমপি/মন্ত্রী না হয়ে এ অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এবার দলীয় মনোনয়নে এমপি হওয়ার পরপরই তাঁকে মন্ত্রী করায় জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, এলাকার মানুষের ভালোবাসায় আমি কৃতজ্ঞ। তাদের ভালোবাসার কারণে বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছি। তাদের প্রত্যাশা পূরণে সবসময়ে কাজ করব। প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা আমাকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উন্নয়ন মূলক কাজগুলো করে যেতে চাই।

উল্লেখ্য, স্কুল জীবনেই এনামুল হক শামীমের নেতৃত্বের বিকাশ ঘটে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্র রাজনীতির হাতেখড়ি শুরু হয় তাঁর। ১৯৭৯ সালে নোয়াখালীর এএম উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থায় তিনি স্কুল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হন। ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাশ করার পর উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির আরও নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপর পর্যায়ক্রমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৮৯ সালে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বিপুল ভোটে তিনি জাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও ১৯৯২ সালে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং ১৯৯৪ সালে সভাপতি নির্বাচিত হয়। এর ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং ’৯৬ এর বিএনপি-জামায়াত বিরোধী ‘জনতার মঞ্চ’ এর অন্যতম সংগঠক ছিলেন এনামুল হক শামীম। ২০০১-২০০৬ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে সারাদেশের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শতাধিক মামলার আসামী করা হয়ে তাকে, একাধিক বার কারাবরণ করেন তিনি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেট হামলায় মারাত্মক ভাবে আহত হন তিনি। এখনও শরীরে গ্রেনেটের আঘাতের চিহ্ন ও স্পিøন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। ১/১১ এর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আওয়ামীলীগের সংস্কারপন্থীরা যখন জননেত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা ও বিরোধিতা করেন তখন ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’কারীদের সর্বপ্রথম প্রকাশ্য বিরোধিতা করেন একেএম এনামুল হক শামীম। এদিকে শামীম ২০০২ থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অবজারভার মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো এবং ২০১২ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় সম্মেলনে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য মনোনীত হন। আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনে এনামুল হক শামীমকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত করা হয়। সাংগঠনিক দায়িত্ব পাওয়ার পর তাকে সবচেয়ে বড় সাংগঠনিক বিভাগ চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্ব দেয়া হয়।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here