খবর৭১ঃতিন আসনে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতির প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চে এ শুনানি আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বিচারপতির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আদালত থেকে বেরিয়ে যান। পরে সোমবার পর্যন্ত আদালত মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
ফলে খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কী পারবেন না, তা সোমবার পর্যন্ত ঝুলে থাকল।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও বদরুদ্দোজা বাদল।
এ বিষয়ে আইনজীবী বদরুদ্দোজা বাদল জানিয়েছেন, আমাদের এই আদালতের প্রতি কোনো আস্থা নেই। সৈয়দ রেফাত আহমেদ ছিলেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি। সুপ্রিমকোর্টের বিধান হল-একজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি যদি কোনো মামলার শুনানি করেন, তবে জুনিয়র কোনো বিচারপতি ওই মামলায় আর শুনানি করতে পারবেন না। সে জন্য এই আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছি।
এর আগে বুধবার প্রধান বিচারপতি খালেদা জিয়ার তিনটি রিট শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বে একক বেঞ্চ গঠন করে দেন।
মামলার সব নথি বুধবার বিকালেই ওই বেঞ্চে পাঠানো হয়। শুনানির জন্য আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সময় নির্ধারণ করেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ।
খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে তিনটি আসনের মনোনয়নপত্রই বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আপিলের শুনানির পর সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বে চার সদস্যের নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত দেন। শুনানিতে প্রার্থিতা বহালের পক্ষে মত দেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
এর বিপক্ষে মত দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চারজন। রিটার্নিং অফিসারের এ সিদ্ধান্ত ও নির্বাচন কমিশনের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে রোববার তিনটি রিট করা হয়।
সোমবার শুনানি শেষে আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার পৃথক তিনটি রিটের ওপর বিভক্ত আদেশ হয়। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ইসিকে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন।
খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। বেঞ্চের ওপর বিচারপতি মো. ইকবাল কবির এতে দ্বিমত পোষণ করেন। আদালত পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন।
সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্টের আদেশসহ নথিপত্র প্রধান বিচারপতির দফতরে পৌঁছে। কিন্তু বুধবার সকালে বিস্তারিত আদেশ লেখার নির্দেশ দিয়ে নথিপত্র হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে ফেরত পাঠানো হয়।
পরে হাইকোর্ট বিস্তারিত আদেশ লিখে বুধবার বিকালে প্রধান বিচারপতির দফতরে ফের পৌঁছান। এর পর প্রধান বিচারপতি বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য একক বেঞ্চ গঠন করেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, নওশাদ জমির, অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
প্রসঙ্গত দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।
খবর৭১/ইঃ