খবর৭১ঃ
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডি।
বুধবার এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিংবডির চেয়ারম্যান গোলাম আশরাফ তালুকদার।
বরখাস্তকৃতরা হলেন- প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, শাখাপ্রধান জিনাত আখতার এবং অরিত্রীর শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনা।
গোলাম আশরাফ তালুকদার বলেন, আমরা গভর্নিংবডির সদস্যরা সভা করে আমাদের অভিভাবক, মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করেছি। যেহেতু তারা তিনজনই মামলার আসামি, তাই গভর্নিংবডির সেক্রেটারি হওয়া সত্ত্বেও অধ্যক্ষকে এ সভায় রাখা হয়নি। আমরা এ বিষয়ে তিনজনকেই চিঠি দেব।’
তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা চলমান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আরও কিছু কার্যক্রম বাকি রয়েছে। যেগুলো পর্যায়ক্রমে নেয়া হবে।’
গভর্নিংবডির সদস্য আতাউর রহমান জানান, আগামী শনিবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে পূর্বনির্ধারিত রুটিনে পুনরায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্থগিত হওয়া বুধবারের (৫ ডিসেম্বর) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর)। আর আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (৬ ডিসেম্বর) পরীক্ষা হবে আগামী মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর)।
এরআগে, বুধবার দুপুরে অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে তাদের এমপিও বাতিলের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্তে শিক্ষার্থী অরিত্রি আত্মহননের প্ররোচনার জন্য এ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ায় তাদের বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলাসহ অন্য আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় দুদিন ধরে ভিকারুননিসায় বিক্ষোভ চলছে। মঙ্গলবার বিক্ষোভের প্রথম দিনে শিক্ষামন্ত্রী স্কুলে গিয়ে এ ঘটনার সঠিক বিচারের আশ্বাস দেন।
পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেও শিক্ষামন্ত্রী তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রির বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ এনেছিল। এ জন্য অরিত্রির মা-বাবাকে ডেকে নেন ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ।
তাদের ডেকে মেয়ের সামনেই অপমান করে বলেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে অরিত্রিকে নকলের অভিযোগে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হবে। এ অপমান সইতে না পেরে বাসায় এসে অরিত্রি আত্মহত্যা করে।
পুলিশ ও পরিবারের তথ্যানুযায়ী, সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর শান্তিনগরে সাততলা ভবনের সপ্তম তলায় নিজ ফ্ল্যাটে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় অরিত্রিকে পাওয়া যায়।
এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে চিকিৎসকরা অরিত্রিকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ছাত্রীর গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে। অরিত্রির বাবা দিলীপ কুমার একজন সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী।
খবর৭১/এসঃ