পত্মীতলায় বাঁকরইল উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ, আদালতে মামলা

0
442

মো. আবু সাইদ, পত্মীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্মীতলায় বাঁকরইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে লোক নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বাসেত আলী এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. হারুন-অর রশিদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিয়োগ বি ত চকরঘু গ্রামের মোজাম্মেল হকের পুত্র আব্দুল মাজেদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সভাপতি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আসামী করে গত ৮ নভেম্বর পত্মীতলা সহকারী জজ আদালতে মামলা দাখিল করেছেন। এছাড়াও মামলায় জেলা শিক্ষা অফিসার ও ওড়নপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াহাব এর পুত্র মাহফুজ আলমকে মোকাবিলা আসামী করা হয়েছে।

মামলার এজাহার ও বাদী সুত্রে জানা গেছে বাঁকরইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের জন্য ২১জুন জাতীয় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে আব্দুল মাজেদ আবেদনের যাবতীয় শর্তাবলী পুরণ করে গত ৩ জুলাই তারিখে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। আব্দুল মাজেদ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রবেশ পত্র না পেলেও নিয়োগ প্রত্যাশী মোকাবিলা আসামী মাহফুজ আলমের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ৮ নভেম্বর অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে মর্মে তিনি বিদ্যালয় কর্ত্তৃপক্ষ হতে প্রবেশ পত্র পেয়েছেন। এর মাধ্যমে আব্দুল মাজেদ নিয়োগ পরীক্ষা বিষয়ে অবগত হন। এরপর গত ৫ নভেম্বর তিনি বাঁকরইল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট প্রবেশ পত্র চাইলে প্রধান শিক্ষক তা প্রদানে অস্বীকৃতি জানান। সংশ্লিস্ট পদের জন্য তাঁর সকল প্রকার যোগ্যতা থাকা সত্বেও বিদ্যালয় কর্ত্তৃপক্ষ থাকে বেআইনী ও ইচ্ছাকৃতভাবে প্রবেশ পত্র প্রদান না করায় এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে তিনি ৮নভেম্বর তারিখে নওগাঁ সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ২৪৩/২০১৮

এ বিষয়ে আব্দুল মাজেদ বলেন, নিয়োগ কার্যক্রম শুরুর পূর্ব হতেই ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে তাঁকে নিয়োগ দেওয়ার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হারুন-অর রশিদ ও প্রধান শিক্ষক বাসেত আলীর সহিত মৌখিক চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী তাঁরা মাজেদের নিকট হতে অগ্রিম হিসাবে নগদ ২লাখ টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু পরে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ১৮ লাখ টাকার বিনিময়ে চকসহবত গ্রামের রফিক এর পুত্র ফারুক হোসেনকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। এর মাধ্যমে তাঁর সাথে প্রতারণা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে দিবর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উক্ত বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি আনিছুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় বর্তমানে পকেট কমিটি দিয়ে চলছে। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির উপর মামলা চলমান আছে। সুতরাং এই কমিটির নিয়োগ দেওয়ার বৈধতা নেই। নিয়োগের নামে বর্তমান কমিটি যে বাণিজ্য করছে তা এলাকার শিক্ষার জন্য অশনিসংকেত।

এ বিষয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হারুন-অর রশিদ ও প্রধান শিক্ষক বাসেত আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের কথা স্বীকার করে বলেন, যথাযথ ভাবে নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ করেই ৮ নভেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের জন্য মোট ২১ জন আবেদন করেন। প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে এদের মধ্য থেকে ১৯জনকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রবেশ পত্র দেওয়া হয়। তবে পরীক্ষায় ৭জন অংশগ্রহণ করেন। নিয়োগের জন্য কাহারো নিকট হতে অর্থ গ্রহণের কথা তাঁরা অস্বীকার করেন। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওয়াজেদ আলী মৃধা বলেন, আমাদের কাজ আমরা করবো মামলার কাজ মামলা করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here