খবর ৭১ঃ মাছের রাজা ইলিশে সয়লাব বাজার। তবুও স্বস্তিতে নেই ইলিশপ্রিয় মানুষ।
ভরা মৌসুমেও দাম হাতের নাগালে না থাকায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। গতকালের চেয়ে হালি প্রতি দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা।
ইলিশ বিক্রেতারা বলছেন, মোকামে মাছ কম আসছে। আর পাইকারি আড়তে সরবরাহ কমে যাওয়ায় একটু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
এদিকে জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই চালের দামেও। নাজিরশাইলের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৬ টাকা আর দেশএগ্রো মিনিকেটের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২ টাকা করে।
তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে শীতকালীন সবজির দাম। গতকাল রাজধানীর শান্তিনগর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, করলা, মুলা ও টমেটোতে বাজার এখন ভরপুর। আছে লাউশাক, লালশাক, পালংশাক, মুলাশাকসহ বিভিন্ন শাক।
সরবরাহ বেড়েছে নতুন আলুর।
এ কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে ৫ থেকে ২০ টাকা করে। সবচেয়ে বেশি কমেছে শিমের দাম। গত সপ্তাহে যে শিম ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, লাউ গত সপ্তাহে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৪০ টাকায়, বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, পিয়াজ কলি ৬০ টাকা, নতুন আলু ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে টমেটোর দাম। গত সপ্তাহের মতোই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা করে।
শান্তিনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা মফিজুর রহমান বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ছে। এ কারণে দাম কমতে শুরু করেছে। দুয়েক দিনের মধ্যে দাম আরও কমবে। তবে হঠাৎ করেই বেড়েছে আদার দাম।
বিক্রেতা মো. ইকবাল বলেন, গত সপ্তাহে আদা বিক্রি করেছি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর এ সপ্তাহে তা প্রতি কেজিতে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬০ টাকায়। ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা করে কমে ডিমের দাম এখন ১০০ থেকে ১০৫ টাকা ডজন। কমেছে কাঁচামরিচের ঝাঁজ।
এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশে বাজার ভরপুর। মৌসুম চললেও ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি জোড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি জোড়া ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
শান্তিনগর বাজারে ইলিশ কিনতে আসা শেখ মাহমুদ বলেন, ইলিশের দেশে, ইলিশের মৌসুমে এত দাম সহ্য করা যায় না। মধ্যবিত্তের কি ইলিশের স্বাদ নেওয়ার অবস্থা থাকবে না?
তবে ইলিশের এই মৌসুমে দাম কমেছে সব সাদা মাছের। বাজার ও মান ভেদে কেজিতে ৩০ থেকে ২শ’ টাকা পর্যন্ত কম দামে বিক্রি হচ্ছে এসব মাছ।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ট্যাংরা মাছ ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, কৈ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মলা ২৭০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, নলা ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, রুই ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ ব্যবধানে এসব মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
গত তিন/চারদিন আগে ট্যাংরা মাছ ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৩৫০ থেকে ৭০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ১২০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, কাচকি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, মলা ৩৭০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, নলা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রুই ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে সুখবরহীন চালের বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৬০ টাকা, মিনিকেট এগ্রো ৫৫ টাকা, বিরুই ৬০ টাকা, মোটা চাল ৪২ টাকা, জিরা নাজির ৬৫ টাকা, চিনিগুঁড়া ১১০ টাকা, পারিজা ৩৮ টাকা, স্বর্ণা ৩৬ টাকা থেকে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নাহিদ রাইস এজেন্সির মালিক আবদুল মাবুদ বলেন, এই সময়ে কোনো বছরই চালের দাম কমে না।
খবর ৭১/ইঃ