খবর৭১ঃবাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর টোল কমানোর দাবিতে রাজধানীর পোস্তগোলায় বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে সোহেল নামে ২৪ বছর বয়সী এক ট্রাক চালকের সহকারী নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত তিনজন। এছাড়া পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন আরও অর্ধশত শ্রমিক।
শুক্রবার সকালে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধরা হলেন- তাসলিমা (৫০), আলআমিন (২৬) ও মানিক (২৬)। তাদের স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বর্তমানে আহত দুজনই ঢামেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ জামান বলেন, সকালে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি শান্ত। ব্যস্ত আছি পরে এই ব্যাপারে কথা বলব।’
জানা গেছে, টোলের হার বাড়ানোর প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিকরা শুক্রবার সকালে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ সেখানে যায়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়লে পুলিশ পাল্টা গুলি চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
সংঘর্ষস্থল থেকে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে গুলিবিদ্ধ একজনকে কাছের ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের নাম সোহেল (২৮)। মহেন্দ্র গাড়ির চালক সোহেল পুলিশের গুলিতে নিহত হন বলে পরিবহন শ্রমিকরা জানান।
হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক কারিমুল হাসান বলেন, “গুলিবিদ্ধ একজনের লাশ আমাদের এখানে এসেছিল। তার বুকের নিচে ও পেটের উপরে গুলির জখম ছিল। পুলিশ এসে লাশটি নিয়ে গেছে।”
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করলে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান বলেন, “আমি একজন নিহত হওয়ার খবর শুনেছি। খোঁজ নিচ্ছি, ঘটনাটি পুরোপুরি জানলে নিশ্চিত করতে পারব।”
সংঘর্ষে শ্রমিক-পুলিশ মিলিয়ে অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। পুলিশের গাড়িও ভাংচুর হয়েছে। বহু শ্রমিককে পুলিশ আটক করেছে বলেও বিক্ষোভকারীদের দাবি।
সংঘর্ষের সময় সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দুপুর ১২টার পর পরিস্থিতি শান্ত হলে গাড়ি চলাচল শুরু হয়।
শ্রমিকরা বলছেন, এই সেতুতে আগে ট্রাকের টোল ছিল ৩০ টাকা। গত ২২ অক্টোবর সেই টোল বাড়িয়ে করা হয় ২৪০ টাকা। হঠাৎ করে এত বেশি টোল বাড়ানোয় তারা বিপাকে পড়েছেন। এই টোল কমিয়ে আনার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করেছিলেন পরিবহন শ্রমিকরা; শুক্রবার তা সহিংস রূপ নিল।
বুড়িগঙ্গা নদীর উপর এই সেতুর টোল বাড়ানোর প্রতিবাদে ২০১৫ সালে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভে তিন দিন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে নৌ পরিবহনমন্ত্রী ও পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খানের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয়।
খবর৭১/ইঃ