সৈয়দপুরে অখ্যাত পত্রিকার সাংবাদিকদের নিয়ে জেলা তথ্য অফিসের প্রেস ব্রিফিং

0
422

তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে অখ্যাত পত্রিকার সাংবাদিকদের নিয়ে সরকারের সাফল্য অর্জন ও উন্নয়ন ভাবনা বিষয়ে জনগণকে অবহিতকরণ, উদ্বুদ্ধকরণ ও উন্নয়ন কার্যক্রমে সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে জেলা তথ্য অফিসের প্রেস ব্রিফিং হয়েছে। গতকাল (সোমবার) সকালে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে দায়সারা গোছের ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস এম গোলাম কিবরিয়া।
নীলফামারী জেলা তথ্য অফিসার মো. মামুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে প্রেস ব্রিফিং বক্তব্য রাখেন সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার। এতে নীলফামারী জেলা সহকারি তথ্য অফিসার প্রকাশ চন্দ্র রায়সহ সৈয়দপুর অখ্যাত কিছু পত্রিকার ১৬জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্য,অর্জন ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সম্পর্কে দেশের জনগণকে ব্যাপকভাবে জানাতে ও সম্পৃক্তকরণে এ ধরনের প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন। আর প্রেস ব্রিফিংয়ে বর্তমান সরকারের নানামূখী উন্নয়ন কর্মকান্ড সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তথ্য- উপাত্ত উপস্থাপন করার কথা। যা কিনা সাংবাদিকরা তাদের লেখনির মাধ্যমে বহুল প্রচারিত পত্রিকার পাতায় তুলে ধরবেন। এতে দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হবেন। তাই দেশের বহুল প্রচারিত দেশের প্রথম সারির প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস্ মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের নিয়ে এ ধরনের প্রেস ব্রিফিংয়ের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। কিন্তু সৈয়দপুর উপজেলায় আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ের ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় ঘটেছে। গতকাল সোমবার নীলফামারী জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে যে প্রেস ব্রিফিং করা হয়েছে তাতে বহুল প্রচারিত অনেক স্থানীয়, আ লিক এবং জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্র পত্রিকার কোন স্থানীয় প্রতিনিধিদের ডাকা হয়নি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন সব পত্র-পত্রিকার স্থানীয় সাংবাদিকদের ডাকা হয়েছে যে সব পত্রিকা আদৌ নিয়মিত প্রকাশিত হয় না, এলাকায় নেই ন্যূনতম সার্কুলেশন। এলাকার লোকজনও কোন দিন পত্রিকার চেহারা পর্যন্ত দেখেননি কিংবা নাম শোনেন নি। এমন সব পত্রিকার সাংবাদিকদের নিয়ে ওই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন অনেক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন যারা কিনা সারাদিন পত্রিকার আইডি কার্ড ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজী আর ধান্দাবাজিতে ব্যস্ত সময় পার করেন। এমনও সাংবাদিক ছিল যারা ছয় মাস কিংবা বছরেরও একটি সংবাদ লেখার জন্য কাগজ কলম হাতে নেননি। সমাজে যাদের নেই কোন রকম গ্রহনযোগ্যতা ও পরিচিতি।
একটি সূত্র জানান, প্রেস ব্রিফিংয়ের জন্য সরকারি বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ করতে জেলা তথ্য অফিসার মামুন -অর-রশিদ উপজেরার কিছু নামধারী হলুদ সাংবাদিকদের ডেকে এমন আয়োজন করেন। লোক দেখানো প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ওই সংবাদিকদের হাতে কিছু কাগজপত্র আর সম্মানির কিি ৎ অর্থ তুলে দেন। বরাদ্দের অবশিষ্ট অর্থ জেলা তথ্য কর্মকর্তা পকেটস্থ করেন বলে অভিযোগ।
এ নিয়ে কথা হলে সৈয়দপুরে কর্মরত বহুল প্রচারিত পত্রিকার স্থানীয় এক সাংবাদিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রবীণ সংবাদকর্মী আক্ষেপ করে বলেন, যে উদ্দেশ্যে সরকারিভাবে এ প্রেস ব্রিফিং করার কথা। গতকালের আয়োজনে সরকারের সে উদ্দেশ্য অনেকটাই ভেস্তে গেছে। কারণ প্রেস ব্রিফিংয়ে দেশের বহুল প্রচারিত অনেক পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধিদের ডাকা হয়নি। কি কারণে এ ধরনের দায়সারা ও লোক দেখানো আয়োজন করা হলো তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।
এ নিয়ে সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সারির এক নেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনিও গতকালের জেলা তথ্য প্রেস ব্রিফিংরে বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের আয়োজনের সরকারের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বাস্তবায়িত হবে না। তিনি জেলা তথ্য অফিসারের কর্মকান্ডের তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
নীলফামারী জেলা তথ্য অফিসার মো. মামুন -অর-রশিদের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে গতকাল সোমবার দুুপুরে মুঠোফোনে কথা হলে প্রথমে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, ভাই কি আর বলব। আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমি তথ্য অফিসে নতুন যোগদান করি এবং এ জেলায়ও নতুন এসেছি। ফলে উপজেলা পর্যায়ের সাংবাদিকদের সম্পর্কে আমার তেমন কিছু জানা শোনা ছিল না। তাই আজকের প্রেস ব্রিফিংয়ে জন্য আমি স্থানীয় একটি সাংবাদিকের কাছে নামের তালিকা চেয়েছিলাম। তিনি সাংবাদিকদের যে তালিকা আমাকে সরবরাহ করেন তা নিয়ে আমি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করি।আর সময় স্বল্পতার কারণে সাংবাদিকদের নামের তালিকা যাচাই-বাছাই করতে পারেনি। আগামীতে আর এ ধরনের ভূলভ্রান্তি হবে না বলে জানান।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here