গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে গৃহহীনরা পাচ্ছে ঘর

0
339

এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ : গোপালঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ছিন্নমূল মানুষ পাচ্ছে আশ্রয়ণ ও গুচ্ছ গ্রাম প্রকল্পে আশ্রয়। বসবাসের জন্য একটি করে ঘর পাচ্ছেন তারা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কাশিয়ানী উপজেলায় চলছে ঘর নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। এতে করে এলাকায় ব্যাপক চা ল্য সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাশিয়ানী উপজেলার ১নম্বর মহেশপুর ইউনিয়নের বাঐখোলা গ্রামে সরকারি খাস জমিতে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। ওই গুচ্ছগ্রামে ২০টি আশ্রয়হীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
পুনর্বাসিতদের মধ্যে শান্তা বেগম, রিজিয়া বেগম জানান, তাদের ২০টি পরিবারের কারো কোন জায়গা জমি ও ঘরবাড়ি ছিল না। গুচ্ছগ্রামে সরকারি ভাবে তাদের জন্য সুন্দর ভাবে বসবাসের জন্য একটি আলাদা ঘরসহ রান্নাঘর, টয়লেট, নলকূপ প্রভৃতি করে দেওয়া হয়েছে। তারা ব্যাপক উপকৃত হয়েছেন। তারা সরকার প্রধান শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেন দেশে সবার জন্য তিনি যেন এভাবে আশ্রহীনদের ঠিকানা করে দিতে পারেন।
উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামে সরকারি খাস জমিতে নির্মিত হচ্ছে শাপলা গুচ্ছ গ্রাম। এখানে ২৫টি পরিবার পাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই। মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। চলছে ঘর নির্মাণের কাজ। পুনর্বাসিত আশ্রয়হীন পরিবার বাছাইয়ের কাজ শেষ করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার ২ নম্বর পারুলিয়া ইউনিয়নের শালিখাডাঙ্গা গ্রামে হচ্ছে আরো একটি গুচ্ছগ্রাম। এখানেও ১০টি ছিন্নমূল পরিবার পাবে নিজেদের বসবাসের ঠিকানা। মাটি ভরাটের কাজ শেষ করে বর্তমানে চলছে ঘর নির্মাণের কাজ। এ ছাড়া ওড়াকান্দি ইউনিয়নে একটি গুচ্ছগ্রামের মাটি ভরাটের পর এবং রাতইল ইউনিয়নে একটি গুচ্ছগ্রামের জন্য মাটি ভরাটের সময় আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বর্তমানে কাজ বন্ধ রেখেছে উপজেলা প্রশাসন।
অন্যদিকে, পারুলিয়া ইউনিয়নের পদ্মবিলা ও দরিপদ্মবিলা আশ্রয়ণের ১০টি ব্যারাকে ৮০টি পরিবার বসবাস করে। দীর্ঘ দিনে তাদের ঘরগুলো জরাজীর্ণ ও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। তারা চালের ওপর পলিথিন দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোনো রকমে বসবাস করে আসছিলেন। তাদের ঘরগুলো উপজেলা প্রশাসন পুনরায় সম্পুর্ন ভাবে মেরামত করে দিয়েছে।
আশ্রয়ণে বসবাসকারী মুক্তিযোদ্ধা নিতাই শিকদার, ভ্যানচালক ছানোয়ার মিয়া, বিধবা মনোয়ারা বেগম জানান, তারা তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে বসবাস করতে পারছিলেন না। ১০টি ব্যারাক পুর্ননির্মাণ করায় এখন তারা দীর্ঘ দিন ধরে ভালো ভাবেই বসবাস করতে পারবেন।
সবার জন্য বাসস্থান উদ্যোগের আওতায় উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে জমি আছে ঘর নাই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে জমি আছে ঘর নাই এমন ২২৬টি পরিবারের জন্য সরকারি অর্থায়নে একটি করে ঘর নির্মাণ ও উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা ওই ঘরে বসবাস করছেন। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে একই প্রকল্পের আওতায় ৪৭১টি পরিবারের জন্য একটি করে ঘর করে দেওয়া হচ্ছে।
কাশিয়ানী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দিন জানান, নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তিন শতাধিক ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করে উপকার ভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ মাসেই বাকি কাজ শেষ হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মাঈন উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সবার জন্য বাসস্থান উদ্যোগের সারথী হয়ে এলাকার দুইজন সাংসদের নির্দেশনা ও নেতৃত্বে এবং জেলা প্রশাসকের সার্বিক তত্বাবধান ও পযর্বেক্ষনে কাশিয়ানী উপজেলায় জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-২০১৭ ও ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ৫০০টি পরিবারের জন্য একটি করে ঘর স্বচ্ছতা ও জবাব দিহিতা নিশ্চিত পূর্বক নির্মাণ কাজ শেষ করে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি মাসেই বাকি কাজ সম্পন্ন করে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরো জানান, জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের পাশাপাশি যাদের জমি ঘর কোনোটাই নাই তাদের গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণ করে সেখানে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। তাছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের যে সব ব্যারাক বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল সেগুলি মেরামত করে তাদের বসবাসযোগ্য করে দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা ভালোভাবে বসবাস করতে পারে।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here