উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলের কুচিয়াবাড়ি গ্রামের পাঁচ সন্তানের জননী ফুজলী বেগম (৮৬)। স্বামী ছামাদ শেখ মারা যান বছর ত্রিশেক আগে। অনেক কষ্ট করে খেয়ে না-খেয়ে তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে বড় করেছেন। ছেলে-মেয়েদের সবার বিয়ে দিয়েছেন। এখন পাঁচ ছেলে-মেয়েরই আলাদা আলাদা সংসার। তার (বৃদ্ধা) প্রতিটা ছেলে মেয়েই আলাদা আলাদা সংসারে ভালোই আছেন। কিন্তু বৃদ্ধা মার দায়িত্ব নিচ্ছেন না কোনো ছেলে-মেয়ে। এখন আর মায়ের ভরন-পোষণের দায়িত্ব নিতে চান না কোনো সন্তান। তাইতো গর্ভধারিণীকে রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে ভ্যানে করে নিয়ে বাঁশবাগানের নিচে রাস্তায় ফেলে যায় ছেলেরা। আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, বুধবার-(২৬সেপ্টেম্বর)
ঘটনাটি ঘটে রাত সাড়ে ১২টার দিকে। ২৭ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ভোররাতে বৃদ্ধাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বড় ছেলে ডাকু শেখের বাড়িতে রেখে এসেছেন। বর্তমানে বারান্দায় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন এই অসহায় বৃদ্ধা।
স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধের স্বামী প্রায় ৩০ বছর আগে মারা যান। অনেক কষ্ট করে তিনি ছেলে-মেয়েদের মানুষ করেছেন। বয়সের ভারে বৃদ্ধা এখন নানা রোগে ভুগছেন। হয়ে উঠেছেন ছেলে-মেয়েদের বোঝা। তিন ছেলের কেউই তার দায়িত্ব নিতে চান না। গ্রামের লোকেরা ছেলেদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। পরে ভোররাতে স্থানীয়রা পুলিশের ভয় দেখিয়ে বড় ছেলে ডাকু শেখের বাড়িতে রেখে এসেছেন বৃদ্ধাকে। এখন বড় ছেলের বারান্দায় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন তিনি। আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান,
একই গ্রামের কলিন্স, আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান,‘বৃদ্ধাকে রাস্তার পাশে একটি প্লাস্টিকের বস্তা বিছিয়ে শুইয়ে রেখে যায়। তখন বৃদ্ধার শরীরে অনেক পোকামাকড়ে ভরা ছিল। এমন দৃশ্য দেখলে চোখে পানি চলে আসে।’
কুচিবাড়িয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম সরোয়ার জানান, তারা বৃদ্ধার ছেলেদের অনেক অনুরোধ করেছেন। কোনো ছেলেই মায়ের দায়িত্ব নিতে চান না। গ্রামের লোকেরা সবাই ছেলেদের (বৃদ্ধার) বলেছেন তারা গ্রামের মানুষ সবাই মিলে বৃদ্ধার খাবার দেবেন। ছেলেরা শুধু বৃদ্ধার থাকার ব্যবস্থা করুক। কিন্তু ছেলেরা তাতেও রাজি হননি।
বিষয়টি নিয়ে বৃদ্ধার ছেলেরা কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীরকুমার বিশ্বাস, আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, বিষয়টি তার জানা ছিল না। ঘটনাস্থলে এখনই পুলিশ পাঠানো হবে। সঠিক ঘটনা জেনে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
খবর ৭১/ই: