খবর৭১ঃপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইভিএম একটা নতুন প্রযুক্তি। আমরা টাকা পাঠাচ্ছি অনলাইনে, গরু কিনছি অনলাইনে আমাদের প্রতিটা কাজই অনলাইনের সঙ্গে জড়িত। কাজেই ইভিএম হচ্ছে এ রকম একটি নতুন প্রযুক্তি।
তিনি বলেন, পৃথিবীর বহু দেশে এই ইভিএমের ব্যবহার আছে। তবে আমরা পুরোপুরি ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করতে চাই না। কিছু কিছু জায়গায় ইভিএম দিয়ে শুরু করতে পারি। আমরা সীমিত আকারে শুরু করতে পারি।
বিমসটেক সম্মেলনে যোগদান শেষে দেশে ফিরে রোববার বিকাল ৪টায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ইভিএম বিশ্বব্যাপী চলমান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই ইভিএমের ব্যবহার হয়। তাড়াহুড়া করে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) চাপিয়ে দেয়া যাবে না। এটা নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হোক।
জিয়াউর রহমান নির্বাচনে কারচুপি নিয়ে এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্নই হচ্ছে চুরি দিয়ে। বিএনপির জন্ম কারচুপির মধ্য দিয়েই। বিএনপির টাকার অভাব নেই, তারা টাকা দিয়ে সব কিনে নিতে পারে।
জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যার সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, কারণ খুনি মোশতাক ছিলেন জিয়ার বিশ্বস্ত। এই হত্যার মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ষড়যন্ত্র করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেছে।
পাকিস্তান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশে এখনো পাকিপ্রেমী কিছু লোক আছে, ইমরান খান নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। তিনি তো খেলোয়াড়জীবনে অনেক ছক্কা মেরেছেন, এখন দেখা যাক ক্ষমতার ছক্কা মারতে পারেন কি না।
আগামীতে সরকার গঠন করতে কতটা আত্মবিশ্বাসী সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জনগণের জন্য কাজ করেছি, জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি, আমরা জনগণের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন জনগণের ওপর নির্ভর করবে আগামীতে কাদেরকে নির্বাচনে জয়ী করবে। জনগণ যদি চায়, এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে- তাহলে অবশ্যই আমাদের নির্বাচিত করবে।
১৫ আগস্ট হত্যার পটভূমি যারা তৈরি করেছেন, তাদের বিচারের জন্য কমিশন গঠন হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আসল খুনিদের বিচার করেছি। তবে এই হত্যার পেছনে যারা জড়িত তাদেরও বিচার হওয়া উচিত। ধীরে ধীরে তাদেরও বিচার করা হবে।
ড. কামাল হোসেনদের জোট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. কামাল হোসেন জাতির পিতার ছেড়ে দেয়া সিটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। বাংলাদেশে একটা শ্রেণি বসেই থাকে যারা নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়, নির্বাচন ঠেকাতে চায়। আমার প্রশ্ন হলো ড. কামাল নির্বাচন চায় কিনা?
ইলেকশন কেউ ঠেকাতে পারবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশে ইলেকশন ঠেকানোর মতো কোনো শক্তি নেই, যতক্ষণ প্রাণ আছে ততক্ষণ দেশের জন্য কাজ করে যাব।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ভুয়া ছবি দিয়ে মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর প্রোপাগান্ডামূলক একটি বই প্রকাশের বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তারা এভাবে ভুয়া ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে জঘন্য কাজ করেছে। কিন্তু এটা তারা কার কাছ থেকে শিখল? আমাদের দেশেও তো হয়েছে। কাবা ঘরের সামনে ব্যানার ধরার ছবির মিথ্যাচারও আমরা দেখেছি। সুতরাং, এসব মানুষের কাছে ধরা পড়ে যায়। মিয়ানমার সরকারও ধরা পড়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিমসটেকের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির জন্য আমরা একমত হয়েছি। সন্ত্রাস, চরমপন্থা দমন, সবার জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দারিদ্র্য দূরীকরণ এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নে জোরারোপ করি।
তিনি আরও বলেন, আমরা নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, বাংলাদেশ বিমসটেকের মতো সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে কাজ করে যাবে।
বিমসটেক সম্মেলনে মিয়ানমারের সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি এসেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিমসটেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় উঠেছে রোহিঙ্গা ইস্যুটি। এছাড়া সম্মেলনের ফাঁকে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেও এ নিয়ে কথা হয়েছে।
কাঠমান্ডুতে ৪র্থ ‘বে অব বেঙ্গল ইনেশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন’ (বিমসটেক) সম্মেলনে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবার সকালে নেপাল যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুদিনের সরকারি সফর শেষে শুক্রবার দেশে ফিরে আসেন তিনি। সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।
খবর৭১/এসঃ