হাসপাতালে ভর্তি পা হারানো ডালিম কি আদৌ বাড়ি ফিরতে পারবে

0
465

বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ২ নং বেডে পা হারানো ডালিমের কি কেউ নেই, নাকি পরিবরের বোঝা ! সে কি অদৌ পারবে তার আপন জনদের কাছে ফিরে যেতে? হাসপাতাল কতৃপক্ষের সেব আর সহযোগীতায় সে এখন পুরো পুরি সুস্থ। সোমবার দুপুরে হাসপাতালে তার সাথে কথা বলতে গেলে বেডে বসে বললো আমার নাম ডালিম। বাবার নাম মোহন। আমরা নয় ভাইবোন। আমার বাড়ি বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড । বাগেরহাট সদর হাসপাতালের নিচতলার ফিমেল ওয়ার্ডের অর্থোপেডিক ২ নাম্বার বেডে প্রায় চার মাস ধরে চিকিৎসাধীন ষাটর্দ্ধো এই নারী রোগী এভাবেই বললেন তার পরিচয় । খুব আগ্রহের সাথে এই কথাগুলোই বারবার বলছিলেন ডালিম পরিচয় দেওয়া ওই রোগী।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার দেয়া ঠিকানায় পরিজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে যেয়ে ঐ ঠিকানায় সেখানে কারও সন্ধান পায়নি। ফলে তাকে হাসপাতালে রেখে তার সেবা দিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তার সঠিক পরিচয় না মেলায় কর্তৃপক্ষ পড়েছে বিপাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই নারীকে কিভাবে স¦জনদের কাছে ফিরিয়ে দিবে তা নিয়ে পড়েছে দুশ্চিন্তায়।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের জুনিয়র কনস্যালটেন্ট ডা. এস এম শাহনেওয়াজ এই প্রতিনিধি কে বলেন, প্রায় চার মাস আগে হাসপাতালের সামনে অজ্ঞাত এক নারীকে পড়ে থাকতে দেখে কর্তৃপক্ষ ভর্তি করে দেয়। ওই নারীর ডান পায়ে পচন ধরায় তার গোড়ালির একটু উপর থেকে অস্ত্রোপচার করে কেটে ফেলি। তাকে আমরা স্বাস্থ্যসেবাসহ পরণের কাপড়, হাঁটার জন্য ক্রাচ দিয়েছি। চিকিৎসার দেয়ার পর তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থ্য রয়েছেন। সেই থেকে ওই রোগী এখানেই রয়েছেন। প্রথম থেকেই তিনি তার বাড়িঘর কোথায় ঠিকমত বলতে পারছেন না। তিনি যে ঠিকানা বলেছেন সেই অনুয়ায়ি আমরা তাকে এ্যাম্বুলেন্সে করে কচুয়ার সাইনবোর্ড এলাকায় সারাদিন ঘুরে তার কোন স্বজনের সন্ধান পাইনি। ওই নারীর বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায় স্মরণশক্তি কমে গেছে এবং মানষিক সমস্যার কারনে তার ঠিকানা ঠিকমত বলতে পারছেন না বলে আমার ধারনা।বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মশিউর রহমান এই প্রতিনিধি কে বলেন, প্রায় চার মাস ধরে ওই বৃদ্ধা আমাদের এখানে ভর্তি আছেন। ভর্তির পর থেকে আমাদের স্টাফরা তাকে খাবার খাইয়ে দেওয়াসহ সব ধরনের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তাকে সুচিকিৎসা দিয়ে পুরোপুরি সুস্থ্য করে তুলেছি। এই চার মাসে কেউ তার খোঁজখবর নিতে আসেনি। তার পরিবারের সদস্যরা কি তাকে বোঝা মনে করে ফিরিয়ে নিতে চাইছে তাও হতে পারে বলে ধারনা করছি। আমরা তার স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে নানা চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখনো কাউকে পাইনি। এভাবে তাকে আর কতদিন এখানে রাখতে পারব তা বুঝে উঠতে পারছি না। আমরা আরও কিছুদিন দেখব। যদি তার স্বজনদের না পাই তাহলে পরবর্তি করণীয় নিয়ে ভাবতে হবে।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here