মো. আব্দুল বাছিত
সিফডিয়া, সিলেটঃ
মানবতার সেবার মহান প্রত্যয় নিয়ে এবং প্রতিটি রোটারি ক্লাবকে একটি আদর্শ ও ইফেক্টিভ ক্লাব হিসেবে গড়ে তুলার লক্ষ্য নিয়ে রোটাবর্ষ ২০১৯-২০ সামনে রেখে প্রস্তুতি সভায় অভিযাত্রা-১ সম্পন্ন হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) বাদ সন্ধ্যা নগরীর ধোপাদিঘীরপাড়স্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অভিযাত্রা-১ সফলের লক্ষ্যে রোটারি ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮২-এর সুরমা জোনের ৪৭ টি ক্লাবের ৩১০ জন রোটারিয়ান উক্ত প্রস্তুতি সভায় অংশ গ্রহণ করেন। প্রোগ্রাম চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি মো. সেলিম খানের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া মূল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন রোটারি ডিজিই লে. কর্নেল (অব.) এম. আতাউর রহমান পীর, সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিডিজি শহীদ আহমদ চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, রোটারি মানবসেবায় বিশ্বব্যাপী অবদান রেখে চলেছে। শিক্ষা, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে মানবকল্যাণে রোটারি এক অনন্য নাম। তাই রোটারিয়ানদেরকে এই ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রেখে সামনে চলতে হবে। অভিযাত্রা-১-এর মাধ্যমে রোটারির নেতৃত্বের মাধ্যমে আমূল পরিবর্তন আসবে। রোটারি আন্দোলনের এই অভিযাত্রায় থামা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি ক্লাবকে একটি আদর্শ ও ইফেক্টিভ ক্লাব হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে কাজ করতে হবে। এছাড়া কর্মপদ্ধতিতে পরিকল্পনা এনে রোটাবর্ষ ২০১৯-২০ কে সাফল্যময় করে তুলতে প্রত্যেক ক্লাবকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে ২০১৯-২০ রোটাবর্ষের জন্য মিশন ও ভিশন উপস্থাপন করেন। তিনি প্রত্যেক ক্লাবকে বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র চালু, স্যানিটারী ল্যাট্রিন স্থাপন, সিনিয়রদের জন্য তহবিল গঠন এবং অন্তত একজন শিক্ষার্থীর এক বছরের পড়াশুনার খরচ বহন করা প্রজেক্টগুলোর অন্তত দুটি প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য গুরুত্বারোপ করেন। ২০১৯-২০-এর গভর্নরের দায়িত্বপালনকালে সিলেটে একটি রোটারি অরফানেজ প্রতিষ্ঠা, রোটারি ৩২৮২-এ ৭টি জোনে ৭টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অভিযাত্রা-১ উপলক্ষে প্রকাশিত স্যুভেনির-এ রোটাবর্ষ ২০১৯-২০-এর জন্য সকল ভিশন-মিশন উল্লেখ আছে বলে তিনি রোটারিয়ানদেরকে এটা অনুসরণ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করেন। পাশাপাশি সকল ক্লাবকে দেওয়া গোল পূরণ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবেন কাজ করার আহবান জানান। এসময় প্রজেক্টরের মাধ্যমে স্যুভেনিরে প্রকাশিত মিশন এবং ভিশন উল্লেখ করেন ডিজিই লে. কর্নেল (অব.) এম. আতাউর রহমান পীর, তাঁেক সহায়তা করেন রোটারিয়ান রুমেল এম এস রহমান পীর। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের সময় এক পর্যায়ে জানান, গভর্নর ট্রেনিং শেষ করে আসার পর রোটাবর্ষ ২০১৯-২০-এর জন্য ডিস্ট্রিক্ট কমিটি ঘোষণা করবেন। রোটারিয়ান পিপি ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদের কুরআন তেলাওয়াত এবং সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত তেলাওয়াতের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত সভা পরিচালনা করেন রোটারি ক্লাব অব জালালাবাদ-এর পাস্ট সেক্রেটারী রোটারিয়ান রুমেল এম এস রহমান পীর, রোটারি প্রত্যয় পাঠ করেন রোটারি ক্লাব অব জালালাবাদ-এর সেক্রেটারী রোটারিয়ান তানভীর আহমদ চৌধুরী। শোকের মাস আগস্ট, এটা অনুধাবণ করে অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন রোটারি ক্লাব অব জালালাবাদের সদস্য রোটারিয়ান আলী আশরাফ চৌধুরী খালেদ, পরবর্তীতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর ইলেক্ট অধ্যক্ষ লে. কর্নেল ( অব.) এম আতাউর রহমান পীর ও ইনকামিং ডিস্ট্রিক্ট ফাস্ট লেডি ফিরোজা রহমানকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করেন রোটারিয়ান শামীম আহমদ।
পিডিজি শহিদ আহমদ চৌধুরী ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ কে ফুল দিয়ে বরণ করেন রোটারিয়ান হানিফ মোহাম্মাদ, রোটারিয়ান মো. সেলিম খান, রোটারিয়ান রুমেল এম এস রহমান পীর, রোটারিয়ান মারুফ আহমদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল ক্লাব ও অতিথিবৃন্দ কে পরিচয় করিয়ে দেন ডিস্ট্রিক্ট কনফারেন্স চেয়ার রোটারিয়ান পিপি এ কে শামসুল হক দীপু। অনুষ্ঠানে দুটি প্রকল্প সম্পন্ন করা হয়। এর মধ্যে একটিতে মৌলভীবাজারের নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী নিপা বেগম ও একই এলাকার রেনু বেগমকে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য দুইটি সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়। অন্যটিতে রোটারী ক্লাব অব সিলেট গ্রীণ- এর প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান আলী মিরাজ মোস্তাকের অর্থায়নে একজন গৃহহীন ব্যক্তিকে গৃহ নির্মাণের জন্য দুই ভান ঢেউটিন প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানেডিজিই লে. কর্নেল (অব.) এম. আতাউর রহমান পীরের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন ইনকামিং ডিস্ট্রিক্ট সেক্রেটারী রোটারিয়ান পিপি নিরেশ চন্দ্র দাশ। এর পরে রুমেল এম এস রহমান পীরের উপস্থাপনায় মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ডিজিই-এর পরিচিতি ও জীবনী নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাস্ট ডিস্ট্রিক্ট সেক্রেটারী রোটারিয়ান পিপি মাহবুব সোবহানী চৌধুরী, রোটারি ক্লাব অব কুমিল্লা সিটির পিপি রোটারিয়ান আবু ফয়েজ খান, রোটারি ক্লাব অব মৌলভীবাজার সেন্ট্রালের পিপি রোটারিয়ান শাহাব উদ্দিন, রোটারি ক্লাব অব সিলেট গ্রীণের পিপি আতাউর রহমান মিলন, রোটারি ক্লাব অব আগ্রাবাদের পিপি রোটারিয়ান এস এস কেরামাতুল্লাহ আজিম, রোটারি ক্লাব অব সিলেট সিটির প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান সাঈদ চৌধুরী, রোটারি ক্লাব অব হবিগঞ্জ সেন্ট্রালের পিপি শামীম আহসান, রোটারিয়ান তাহমিনা বেগম গিনি, রোটারি ক্লাব অব সিলেট মহানগরের পিপি এম রহমান ইমন, রোটারি ক্লাব অব সিলেট প্যারাডাইজের পিপি কামরুল ইসলাম, সিলেট গ্যালাক্সির নাজিম উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পিপি রোটারিয়ান প্রফেসর ডা. মীর মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দকে পুরস্কার প্রদান, র্যাফেল ড্র’র মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
খবর ৭১/ইঃ