খবর ৭১ঃ পহেলা বৈশাখে তো এই পান্তা খাওয়ার উৎসব শুরু হয়ে যায়। শহরের মানুষেরা এই পান্তা ভাত খায় ঐতিহ্য হিসাবে কিন্তু আমরা হয়তো অনেকেই জানি না এই অতি পরিচিত পান্তা ভাতের উপকরিতা সম্পর্কে। আসুন জেনে নিই পান্তা ভাতে কী কী উপকারিতা রয়েছে।
♦ আমরা যে সাধারন চাল সিদ্ধ করে ভাত রান্না করি তার মধ্যে ফাইটিক এসিড থাকে যা বিভিন্ন খনিজ লবন যেমন-লৌহ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংকইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং যা এইসমস্ত খনিজ লবণকে দেহে শোষনে বাধা দেয়। কিন্তু যখন ভাতকে সারা রাত ভিজিয়ে রাখা হয় তখন ভাতের শর্করা গাঁজনের ফলে লেকটিক এসিড তৈরি হয় যা ভাতের সকল খনিজ লবণকে হাজার গুণ বাড়িয়ে দেয়।
♦ ১০০ গ্রাম ভাতকে ১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে পান্তাভাত তৈরি করলে তাতে লৌহ বা আয়রনের পরিমাণ ৩.৪ মিলিগ্রাম থেকে ৭৩.৯১ মিলিগ্রাম হয়। যাদের রক্তস্বল্পতা আছে তাদের জন্য পান্তাভাত খুবই উপকারি।
♦ ১০০ গ্রাম ভাতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ২১ মিলিগ্রাম থাকে যা পান্তা ভাতে ৮৫০ মিলিগ্রাম হয়ে যায়। যাদের হাড় ক্ষয় রোগ বা দেহে ক্যলসিয়ামের অভাব আছে তারা খেতে পারেন পান্তা।
♦ পান্তা ভাতে পটাসিয়াম বেড়ে ৮৩৯ মিলিগ্রাম হয়। ফলে যাদের হৃদরোগ আছে বা যাদের উচ্চ রক্ত চাপ আছে তাদের জন্য পান্তা উপকারী।
♦ পান্তা ভাতে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে ৪৭৫ মিলিগ্রাম থেকে ৩০৩ মিলিগ্রাম হয়। জিংকের পরিমাণও বেড়ে যায় অনেক গুণ। যেকোন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।
♦ সকালের নাস্তার জন্য খুবই ভাল খাবার পান্তা। কারণ পান্তাভাত শরীরের অম্ল ও ক্ষারের সমতা রক্ষা করে। শরীরকে ঠান্ডা রাখে। এক কাপ চা বা কফির চেয়ে শরীরের জন্য অনেক ভাল একপ্লেট পান্তা ভাত।
♦ পান্তা ভাত ভিটামিন বি৬ এবং বি১২ এর ভাল উৎস যা রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে এবং অন্য কোন খাবারে এত সহজে এত পরিমাণে এই ভিটামিন পাওয়া যায় না।
♦ পান্তা ভাতে প্রচুর উপকারি ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয় যা হজমে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শক্তি যোগায়।
♦ পান্তাভাত কোলাজেন তৈরি করে যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি রক্ষা করে এবং নতুন কোষ তৈরি করে।
♦ পান্তা ভাত আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে।
♦ পান্তা ভাত পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
♦ পান্তাভাত যদি লাল চালে ভাতের হয় তাহলে তার পুষ্টিগুণ আার বেশি হয় সাদা চালের পান্তা থেকে আবার বসা ভাত অর্থাৎ মার না ফেলে যে ভাত রান্না করা হয় সেই ভাতের পান্তর পুষ্টিগুণ মার ফেলা ভাতের পান্তা থেকে বেশি হয়।