খবর৭১:মাগুরা প্রতিনিধি॥ মাগুরার সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় শনিবার সকালে একলাস মোল্যা (৬০) নিহত হওয়ার ঘটনায় ১১ নারীসহ ১৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে তাদের মাগুরা বিচারিক আদালতে হাজির করা হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। আটককৃতরা হচ্ছেন চাঁদপুর গ্রামের শেফালী বেগম, সোনিয়া খাতুন, রাজিয়া বেগম, রানু বেগম, সুফিয়া খাতুন, রাইমা খাতুন, শুকুরন নেছা, গোলপি বেগম, মোছাম্মৎ পান্না বেগম, মোছাম্মৎ জামেনা বেগম, মোছাম্মৎ পারুল বেগম ও আব্দুল কুদ্দুস বিশ্বাস, খলিলুর রহমান, ইসারত বিশ্বাস, রঞ্জু বিশ্বাস এবং বাদশা মোল্যা।সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মাহবুব হাসান জানান- এলাকায় শান্তি রক্ষা ও পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে ওই এলাকার ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে গতকাল রবিবার দুপুরে মাগুরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফিরোজ আল মামুন এর আদালতে হাজির করা হয়। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।এদিকে আজ ঘটনাস্থল চাঁদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে – নিহত একলাসের পরিবারসহ গোটা গ্রামে এখনও চলছে শোকের মাতম। সামান্য ঘটনায় এ ধরনের হত্যাকান্ড সংগঠিত করায় এলাকার অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি প্রকৃত দোষিদের শাস্তি দাবি করেছেন তারা। গোটা এলাকায় এক ধরনের আতংক বিরাজ করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে অভিযুক্তদের পরিবারের পাশাপাশি গ্রাম্য দলাদলির সাথে জড়িত প্রত্যেকের বাড়িই এখন পুরুষ শুণ্য। এমনকি কোন কোন বাড়ি পুরোপুরি তালাবদ্ধ। লুটপাট ও ভাংচুরের আশংকায় অনেকেই ঘটনার পরপরই তাদের গবাদি পশুসহ দামি গৃহস্থলি মালামাল বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলেছেন।এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি আবু বক্কর, সোলেমান মিয়াসহ একাধিক ব্যক্তি জানান- সামান্য কথা কাটাকাটির ঘটনায় গ্রাম্য পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন একলাচ মোল্যাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তিনি একজন নিরিহ বয়স্ক কৃষক। প্রতিপক্ষের লোকজন শনিবার সকালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার বাড়িতে এসে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এছাড়া তার স্ত্রী ও ২ ছেলেকে কুপিয়ে যখম করেছে। তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িত দোষিদের শাস্তি দাবী করেছেন। পাশাপাশি গ্রামের শান্তি রক্ষায় সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরার প্রয়োজন বলে জানান। আবু বক্কর আরও জানান – চাঁদপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় শতাধিক বসতি রয়েছে। গ্রাম্য দলাদলির সূত্রে এ পরিবারগুলো দুভাগে বিভক্ত ছিল। যার একটির নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় ইউপি মেম্বর আতিয়ার মোল্যা অন্যটি সোহরাব হোসেন। সম্প্রতি গ্রামের শান্তি রক্ষায় এ দু নেতা পূর্ববর্তী বিরোধ মিটিয়ে একত্রিত হন। সামাজিক এই বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে সোহরাব হোসেন আতিয়ার রহমানসহ কয়েকজনকে তার বাড়িতে দাওয়াত করে খাওয়ান। এই দাওয়াত থেকে বাদ পড়েন ইমান আলীসহ কয়েকজন গ্রাম্য মাতব্বর। যা নতুন করে বিরোধ তৈরী করে। এ বিরোধ সূত্রে শুক্রবার ইমান আলীর সমর্থকদের সাথে অপর গ্রাম্য মাতব্বর ফুল মিয়ার সমর্থকদের বাক বিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। এই উত্তেজনা আরও চরম আকার ধারণ করলে শনিবার সকালে ফুল মিয়ার সমর্থকরা ইমান আলীর সমর্থক একলাচ মোল্যার বাড়িতে এ হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে।
খবর৭১/জি: