খবর ৭১ঃ জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর মিয়ানমারের উপর প্রবল চাপ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব খুব সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পও পরিদর্শন করেছেন। তার এই সফর রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বড় একটি চাপ সৃষ্টি হলো মিয়ানমারের উপর। সেই চাপটা ক্রমান্বয়ে মিয়ানমার বহন করতে পারবে কিনা দেখার বিষয়।
তিনি আরও বলেন, চীন-রাশিয়া ও ভারতসহ যেসব দেশ মিয়ানমারকে সমর্থন করছিল তারা এখন ধীরে ধীরে পেছনে চলে যাচ্ছে। সর্বশেষ আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন সফর করেছেন। সেখানে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্থ করেছেন যে, মিয়ানমার বাংলাদেশে আশ্রিত তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে রাজি। এটি হচ্ছে জাতিসংঘের বাইরে আরেকটি মুভ। কারণ যেসব জায়গা থেকে মিয়ানমার শক্তি অর্জন করে সেসব জায়গা থেকে যখন এ ধরনের বক্তব্য আসে তাতে বোঝা যাচ্ছে চীনও কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে পৃথিবী থেকে।
এক প্রশ্নের জবাবে মে. জে. (অব.) আবদুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশ খুব যৌক্তিকভাবে রোহিঙ্গা সমস্যাটাকে প্রসারিত করে জটিল করতে চাইছে না। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকায় প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে ধারাবাহিক ও খুব দ্রুতভাবে। এই প্রবৃদ্ধি থামাতে হলে একটা সংঘাতময় পরিস্থিতি ছড়িয়ে দেওয়া লাগবে, সেটা অনেকেই করতে চাইবে। এর পেছনে যে ভূ-রাজনীতি কাজ করছে, সেটিকে মাথায় রেখেই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যেতে হবে। মাথা গরম করা সমাধান বাংলাদেশ খুঁজছে না, চাইছে শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক। শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে হবে, রোহিঙ্গাদেরও ফেরত পাঠাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কিছু আঞ্চলিক দেশ বা এর বাইরের দেশ চীন-রাশিয়া ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের কারণেই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো শক্ত অবস্থান নিচ্ছে না। এটা না করাতেই জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে একটি সমস্যা হচ্ছে যে, চীন সক্রিয়ভাবে তাদের যে ভেটো পাওয়ার রয়েছে নিরাপত্তা পরিষদে সেটি তার প্রয়োগ করার হুমকি দিচ্ছে, এবং কখনো কখনো তা প্রয়োগও করছে। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে এ সংকটের সমাধানের যে জায়গাটি রয়েছে, বর্তমানা কাঠামোতে সেটি হচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নিরাপত্তা পরিষদ সবখানে রোহিঙ্গা সংকট উত্থাপন ও আলোচনাও হয়েছে। এখন কোনো একটি সমাধান চাপিয়ে দিতে গেলে, সেই শক্তি প্রয়োগ বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের যে ক্ষমতা কেবল নিরাপত্তা পরিষদের।
খবর ৭১/ই: