খবর ৭১: দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো গাজীপুর সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। ইতোমধ্যে ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির যুগ্ম-সচিব (জনসংযোগ) এসএম আসাদুজ্জামান।
নির্বাচনে মেয়রপদে মোট সাত জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে ছয়জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের, একজন স্বতন্ত্র। তবে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম এবং বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের মধ্যে।
এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, গাজীপুর সিটিতে ছয়টি কেন্দ্রে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন বিচারের জন্য ২২ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী টিমের সঙ্গে ৫৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং এবং সমন্বয়ের জন্য নির্বাচন কমিশনে আইনশৃঙ্লা বিষয়ক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, পর্যবেক্ষক হিসেবে আটটি সংস্থার ২০৬ জন থাকবেন। গণমামধ্যম কর্মী হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন প্রিন্ট মিডিয়ার ২৫৪ জন, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ৩০৪ ও অনলাইন নিউজ মিডিয়ার ১০৯ জন।
এদিকে নির্বাচনে ভোটের পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিএনপি। ভোটের আগরে দিন সোমবার সকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গাজীপুরে জনগণ নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন এখন পর্যন্ত সেই পরিবেশ দৃশ্যমান হয়নি।’
তবে বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে সোমবার দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেন, ‘গাজীপুরে নির্বাচনের পরিবেশে আমরা সন্তুষ্ট। সরকার ও আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের সহায়তা করে যাবে। কমিশনও বলেছে তারা সব সময় পরিস্থিতি মনিটরিং করছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির একটা অপকৌশল থাকে, প্রতিটি নির্বাচনের আগেই তারা উস্কানিকমূলক অপপ্রচার করে থাকে। জিতলে বলে সঠিক হয়েছে, না জিতলে বলে ঠিক হয়নি। কিন্তু, নির্বাচনে হারজিত থাকবেই। আমরাও তো কুমিল্লা এবং রংপুরের নির্বাচনে হেরেছি।’
নির্বাচন ঘিরে নগরীতে ২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার থেকে তারা টহল দিচ্ছে। ৬০০ র্যা ব সদস্য ছাড়াও পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১ হাজার ২৪ জন ভোটে দায়িত্ব পালন করবেন।
রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মন্ডল জানিয়েছেন, গত রোববার সন্ধ্যার মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসারদের মধ্যে ভোটগ্রহণের সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন-অর রশিদ বলেছেন, যে কোনো মূল্যে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করা হবে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।
এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন।
৫৭টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবার একটি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে এক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।