খবর ৭১:
খেলার ৫৩ মিনিটে পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। কিন্তুু সেই পেনাল্টি মিস করে বসেন গ্রুপের প্রথম ম্যাচেই স্পেনের বিপক্ষে পেনাল্টিতে গোল করা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ম্যাচের উত্তেজনা ছড়ায় শেষ মিনিট পর্যন্ত। অতিরিক্ত সময়ে ভিএআরের কল্যানে পেনাল্টি থেকে গোল করে ১-১ সমতায় আসে ইরান। কিন্তু সেটাও যথেষ্ট ছিল না তাদের জন্য। ড্র করে বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হলো এশিয়ার দেশ ইরানকে। অন্যদিকে স্পেন শেষ সময়ের গোলে ড্র করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াতে পর্তুগালকে দ্বিতীয় হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো গ্রুপে।
বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের নিজেদের শেষ ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে মাঠে নামে পর্তুগাল। দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে এই ম্যাচে ড্র করলেই চলতো পর্তুগালের। অন্যদিকে, জিততেই হতো এশিয়ান জায়ান্ট ইরানের। এমন কঠিন সমীকরণের ম্যাচে পর্তুগালের সঙ্গে সমান পাল্লা দিয়ে লড়াই করেছে ইরান। প্রথমার্ধে পর্তুগালের কারেজমার গোলে এগিয়ে গেলেও ম্যাচে অন্তিম মুহূর্তে গোল করে ইরানকে সমতায় ফেরান আনসারিফার্দ।
রেফারি যখন বিরতির বাঁশি বাজাবেন ঠিক তার আগ মুহূর্তেই ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন কারেজমা। ডান পাশে থেকে বল নিয়ে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ডান পায়ের উল্টো দিক দিয়ে দুর্দান্ত শটে অসাধারণ গোল করে দলকে প্রথমার্ধে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন বেসিকতাসে খেলা এই ফুটবলার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে পর্তুগাল। ৫৩ মিনিটে পেনাল্টি বক্সের ভেতর রোনালদোকে ফাউল করলে রেফারি এরিয়ে যান। পরবর্তীতে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে রোনালদোর নেয়া শট রুখে দেন বেইরানভান্দ। ম্যাচের উত্তেজনা ছড়ায় শেষ দশ মিনিটে।
৮০ মিনিটের সময় ইরানের রক্ষণভাগের ফুটবলারকে কনুই দিয়ে আঘাত করার কারণে লাল কার্ডের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলেন রোনালদো। ভিএআরের মাধ্যমে রেফারি ফাউল নিশ্চিত করে রোনালদোকে লাল কার্ড না দিয়ে হলুদ কার্ড দিয়ে সাবধান করেন। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে পর্তুগালের ডিফেন্ডার সেডরিকের হাতে বল লাগলেও রেফারি এরিয়ে যান। পরবর্তীতে ভিএআরের মাধ্যমে হ্যান্ডবল নিশ্চিত হয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন।
স্পট কিক থেকে ডান কর্নারের দুর্দান্ত শট করে ইরানের হয়ে বিশ্বকাপে প্রথম গোলটি করেন আনসারিফার্দ। সমতায় ফিরে ইরান সুযোগ পেয়েছিল ম্যাচটি জিতে যাওয়ার কিন্তু ৯৪ মিনিটে তারেমি পর্তুগিজ গোলরক্ষককে ফাঁকা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হলে ড্র নিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় ইরানকে। অন্যদিকে, গ্রুপের দ্বিতীয় হয়ে পরবর্তী রাউন্ডে উরুগুয়ের সঙ্গে লড়াই করবে রোনালদোর পর্তুগাল।
অন্যদিকে ২-২ গোলে মরক্কোর সঙ্গে ড্র করেছে স্পেন। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে শেষ মুহূর্তে স্পেনকে গোল করে বাঁচিয়েছেন আসপাস। ২-২ গোলে ড্র করার কারণেই ‘বি’ গ্রুপ থেকে ২-২ গোলে ড্র করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে স্পেন।
কালিনিনগ্রাদে শুরু থেকেই প্রভাব বিস্তার করে খেলতে থাকে স্পেন। কিন্তু ১৪ মিনিটেই ধারার বিপরীতে গোল খেয়ে বসে স্পেন। যদিও ১৯ মিনিটে সেই গোল শোধ করে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ৮১ মিনিটে গোল করে আবারও মরক্কো এগিয়ে যায়। ইনজুরি সময়ে (৯০ + ১ মিনিটে) সমতায় ফেরে স্পেন।
খেলার ১৪ মিনিটেই ডিফেন্ডারদের অমার্জনীয় ভুলে গোল খেয়ে বসে স্পেন। ম্যাচের শুরুতেই বলতে গেলে ব্যাকফুটে। অথচ, তখনও পর্যন্ত ৭৫ ভাগ বল পজেশন ছিল স্পেনের দখলে। মাঝ মাঠে সার্জিও রামোসের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন খালিদ বোতাইব। সামনে আর কেউ নেই।
বোতাইবের গতির সঙ্গেও যেন কেউ পেরে ওঠার জো নেই। উসাইন বোল্টের চেয়েও বেশি গতিময় হয়ে উঠেছেন তিনি। সামনে শুধু গোলরক্ষক ডি গিয়া। পেছন পেছন জেরার্ড পিকে দৌড়ে এলেন। কিন্তু পৌঁছাতে পারলেন না। বোতাইব নিলেন বুদ্ধিদীপ্ত শট। ডি গিয়ার দুই পায়ের ফাঁক গলে সোজা বল জড়িয়ে গেলো স্পেনের জালে।
গোল হজম করার পর সেটা শোধ করতে বেশি সময় নিল না স্পেন। ১৯তম মিনিটে টিপিক্যাল স্প্যানিশ আক্রমণ। ইসকো আর ইনিয়েস্তার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। কিন্তু ডি বক্সের মধ্যে একেবারে পোস্টের সামনে মরক্কোর পার্ক করা বাস ফাঁকি দিয়ে গোলের বলটি অসাধারণভাবে বানিয়ে দিলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।
গোলের বাম পাশ থেকে হালকা ব্যাকপাস ছিল ইনিয়েস্তার। পোস্টের সামনে পেয়ে যান ইসকো। বলটি থামিয়ে ডান পায়ের দারুণ এক প্লেসিং শর্ট। সঙ্গে সঙ্গেই জড়িয়ে গেলো জালে। ১-১ সমতায় ফিরলো স্পেন।
প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে, ইনজুরি সময়ের ২য় মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন দিয়েগো কস্তা। কিন্তু পোস্টের সামনে তিনি শুধু বলে পা লাগাতে ব্যর্থ হলেন। না হয়, প্রথমার্ধেই এগিয়ে যেতে পারতো স্প্যানিশরা।