শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: ৮৫ যশোর-১(শার্শা)’র সাংসদ আলহাজ্ব শেখ আফিল উদ্দিন বলেন, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বের কারণে আজ সারা বাংলাদেশের প্রত্যেক অঞ্চলে উন্নয়ন হয়েছে এবং হচ্ছে। যার কারণে অনুন্নত দেশের তালিকা থেকে আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছি। সম্প্রতি জাতিসংঘ এর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও দিয়েছে। সেখানে বেনাপোল পৌরসভার মেয়রসহ তার রাজনৈতিক সহচররা শার্শার উন্নয়ন খুজে পাচ্ছেন না। তিনি প্রতিনিয়ত ইফতার ও দোয়া মাহফিলের নামে শার্শার বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-বিএনপি থেকে নিয়ে আসা কিছু হাইব্রিড নেতাদের সাথে নিয়ে স্থানীয় এমপিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে যাচ্ছেন। এটা কিসের ইঙ্গিত? সোমবার বিকেলে শার্শা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কর্তৃক এক ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধাণ অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
এসময় সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিন আরো বলেন, মনে রাখতে হবে মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ কখনো বেশি হয় না। যদি হয়! বুঝতে হবে সে ডাইনী। স্বাধীনতার পরবর্তী দীর্ঘ সময়ে অনেক অতিথি পাখিরা বাংলাদেশকে শাসন করেছেন। কিন্তু উন্নয়ন বা সুশাসন কোন সুবিধাই তারা মানুষকে দিতে পারেনি। একমাত্র যিনি এদেশটাকে জন্ম দিয়েছিলেন সেই মহান পুরুষ বঙ্গবন্ধুই এদেশকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন এঁকেছিলেন। উন্নয়নও করার চেষ্টা করেছিলন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে নৌর্কার বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করে অনুন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে দিয়েছেন জাতীর জনকের গুনবতী কণ্যা তথা আমাদের প্রধাণ মন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই, দেশের সকল উপজেলায়ই যে উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা বলার অবকাশ রাখে না। সেখানে শার্শার উন্নয়নের কথা বলাই বাহুল্য। গ্রাম্য অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে যেখানে নিজ উদ্যোগে একটি জুট মিল স্থাপন করে বেকার প্রায় ১০ হাজার তরুণ-তরুণী, স্বামী পরিত্যাক্তা, বিধবাসহ প্রতিবন্ধী নর-নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। উপজেলার শতকরা ৯৫ ভাগ পরিবারে দেয়া হয়েছে বিদ্যুতের নতুন সংযোগ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বহুতল ভবন ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। কৃষকের উন্নয়নে খাল খনন করা হয়েছে। মানুষের যাতায়াতের জন্য খালের দু’পাশ দিয়ে করা হয়েছে ভেড়ি বাঁধ। যোগাযোগ ব্যবস্থায় গ্রামের ভূতুড়ে পল্লীরও সকল রাস্তা পাকা প্রায়। মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরসহ প্রায় সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কেবল পাকা-ই নয়, টাইলস ও এসিযুক্ত করা হয়েছে।
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের পরিচালনায় অত্র ইউনিয়নের শাখারীপোতা মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে শেখ আফিল উদ্দিন এমপি আরো বলেন, ‘যাদের ইতিহাস নেই, তারাই ইতিহাস ধ্বংস করে। এক সময় রোদ-বৃষ্টি, খরা, বন্যায় এই শার্শা উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তসহ বাহাদুরপুর এলাকায়ই সকল ফসল হতো না। যার রাজস্বাক্ষী এই এলাকার জনগণ। তখন মানুষের সুখে-দুঃখে পরম বন্ধু হিসেবে পাশে ছিলাম, এখনও আছি এবং আগামীতেও থাকবো। কারণ মানুষের সেবা করাই আমার উদ্দেশ্য। বলেন, আমি খালি হাতে শার্শার রাজনীতিতে আসিনি। প্রধান মন্ত্রী নৌকা দিয়েছিলেন আর বাবা দিয়েছিলেন টাকা। সেই দুই পুজি দিয়ে অদ্যবধি শার্শাবাসীকে সেবা করে চলেছি। বিনিময়ে তেমন কিছুই চাইনি। চেয়েছি কেবল এলাকার মানুষের ভালোবাসা।
এসময় সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিন বিগত সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার এজেন্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও শার্শার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। তাদের সেবা করে যেতে চাই। তাই, সকল বিভেদ ভুলে আগামীদিনেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ করতে হবে।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান, যশোর জেলা পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল, বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন, শার্শা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও যশোর জেলা পরিষদের সদস্য অহিদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ও শার্শা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সোয়ারাব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান, বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বজলুর রহমান, শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সরদার, পুটখালী ইউপি চেয়ারম্যান হাদিউজ্জামান, যুবলীগ নেতা আমির হোসেন প্রমুখ।
এসময় বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।