খবর ৭১ঃ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে চোট পেয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর লিভারপুল তারকা এবং বর্তমানে ফুটবল ক্রেজ মোহাম্মদ সালাহ বিশ্বকাপের মাঠে নামতে পারবেন কিনা সেটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
লিভারপুলের ম্যানেজার ইয়ুর্গেন ক্লপের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানায়, তার ইনজুরি খুবই মারাত্মক।
তবে বিশ্বকাপে সালাহর যে দলের হয়ে খেলার কথা – সেই মিশর আশাবাদী যে টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগেই তিনি চোট থেকে সেরে উঠবেন এবং তাদের হয়ে মাঠ কাঁপাবেন।
রেয়াল মাদ্রিদের অধিনায়ক সের্জিও রামোস খেলার ২৬ মিনিটের মাথায় সালাহকে টেনে মাটিতে ফেলে দিলে তিনি কাঁধে চোট পেয়েছেন। প্রথমে মাঠেই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি খেলা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আর পারেন নি। পরে তিনি ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে মাঠের বাইরে চলে যেতে বাধ্য হন। এসময় তিনি কাঁদছিলেন।
ফাইনালে সালাহর দল লিভারপুল ৩-১ গোলে হেরে যায় রিয়াল মাদ্রিদের কাছে এবং রেয়াল পরপর তিনবার শিরোপা জিতে হ্যাট্রিকের গৌরব অর্জন করেছে।
ইয়ুর্গেন ক্লপ জানিয়েছেন, সালাহকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এক্স-রে করে দেখার জন্যে। আঘাতটা হয় তার কলারবোনে কিম্বা তার কাঁধে। তবে দেখে খুব একটা ভালো মনে হচ্ছে না।
তবে মিশরের ফুটবল এসোসিয়েশন টুইট করে জানিয়েছে যে সালাহর এক্স-রে করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে যে তার কাঁধের লিগামেন্ট মচকে গেছে।
মিশরের ফুটবল কর্তৃপক্ষ আশা করছে, রাশিয়ায় বিশ্বকাপ শুরুর আগেই সালাহ এই চোট থেকে সেরে উঠবেন।
আগামী ১৪ই জুন থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবল।
এই মৌসুমে লিভারপুলের হয়ে মোহাম্মদ সালাহ ৪৪টি গোল করেছেন। ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার ৩৪ মিলিয়ন পাউন্ডে গত জুন মাসে রোমা থেকে চলে আসেন লিভারপুলে। প্রথম সিজনেই তিনি লিভারপুলসহ সবাইকে মাত করে দিয়েছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ গোলদাতা তিনি। করেছেন ৩২টি গোল। আর লিভারপুল পয়েন্ট তালিকায় উঠে এসেছে চার নম্বরে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে সালাহ যতোক্ষণ কিয়েভের মাঠে ছিলেন, রিয়াল মাদ্রিদের গোল পোস্ট লক্ষ্য করে লিভারপুল ৯টি শট খেলেছে কিন্তু তাকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেওয়ার পর প্রথমার্ধে আর কোন শট নিতে পারেনি।
সালাহকে নিয়ে মিশরে কান্না
মিশরীয় ফুটবল সাংবাদিক মারওয়ান আহমেদ লিখেছেন, তিনি মনে করেন আসলেই এটি একটি বিপর্যয়কর ঘটনা। এটা ব্যাখ্যা করার মতো কোন ভাষা তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।
তিনি লিখেছেন, সালাহ যখন মাটিতে পড়ে গেল তখন মিশরে কয়েক মিনিটের জন্যে নিরবতা নেমে এসেছিল। পরের বার যখন সে মাঠে বসে পড়লো তখন আমরা বুঝতে পারলাম ব্যাপারটা খুব একটা সুবিধার নয়। তাকে মাঠের বাইরে চলে যেতে হবে।
তিনি বলেছেন, মিশরের কোনো মানুষই এরকম একটা দৃশ্য দেখতে চায়নি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে এর আগে আমরা আর কোন মিশরীয়কে খেলতে দেখিনি। মিশরীয়দের তখন কেমন লাগছিল সেটা লেখার জন্যে আমি কোন শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না। অনেকে তো কাঁদতেই লাগলো।
তবে তিনি আশা করছেন, চোট থেকে সেরে উঠবেন সালাহ এবং বিশ্বকাপ খেলবেন।
মিশরের ইতিহাসে তিনি একজন সেরা ফুটবলার। গত ২৮ বছর ধরে আমরা বিশ্বকাপ খেলতে পারি নি। এতো কাছাকাছি পৌঁছে এখন আমরা দেখতে চাই না যে আমাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যাক, লিখেছেন মিশরের এই ফুটবল সাংবাদিক।