খবর ৭১;রাজধানীর কাঁচাবাজারে কিছু সবজির দাম শুনলেই মনে হবে তীব্র সংকট। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সবজির দাম বেড়েই চলেছে। আর সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম বেড়েছে দ্বিগুণ।
গত সপ্তাহে যে বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। তা শুক্রবার রাজধানীর প্রায় প্রত্যেকটি বাজারে বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। টমেটো ও কাঁচা মরিচের দামও বাড়তি। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা।
অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। এ ছাড়া চাল-ডালসহ বেশ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম ছিল স্থিতিশীল।
শুক্রবার রাজধানীর নয়াবাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার, কারওয়ান বাজার, রামপুরা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বেগুন বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। গত সপ্তাহে যে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা শুক্রবার ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। এদিন চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, দেশি টমেটো ৬০ টাকা বিক্রি হয়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৫০ টাকা। বরবটি ৫৫-৬০ টাকা, করলা ৫৫ টাকা, শিম ৬০ টাকা, দেশি শশা ৬০-৭০ টাকা, গাজর ৫০-৫৫ টাকা, পটল ৫০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ২০ টাকা বিক্রি হয়।
আমদানি করা পেয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪৮-৫০ টাকা। এছাড়া রসুন কেজিপ্রতি ১১০-১২০ টাকা বিক্রি হয়, আদা বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকা। ধনিয়া পাতা প্রতি আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। যা সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা। পুদিনা পাতা আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা। ৩০ টাকার লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।
রাজধানীর রামপুরা বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা অসমা বেগম বলেন, রমজানকে টার্গেট করে বিক্রেতারা সব ধরনের সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বেগুনে তো হাত দেয়া যাচ্ছে না। প্রতি কেজি বেগুনে হত সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ দাম বেড়েছে। কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে। টমেটো থেকে শুরু করে ইফতার আইটেমে ব্যবহৃত পুদিনা পাতা ও ধনিয়া পাতা যে যেভাবে পারছে দাম বাড়াচ্ছে। যার কারণে আমাদের মতো সাধারণ ভোক্তাদের প্রথম রোজা থেকেই পণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অন্যদিকে চাহিদা বাড়ায় সব ধরনের মাছে দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। কারওয়ান বাজারের কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মাছে দাম বেড়েছে ১০-২০ টাকা।
শুক্রবার রুই ও কাতলা প্রতি কেজি ২৪০-৩১০ টাকা, চিংড়ি মাছ বড় আকারে প্রতি কেজি ১ হাজার ২০ টাকা, মাঝারি আকারের ৭৩০ টাকা এবং ছোট আকারের ৫২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১৩০-১৪০ টাকা, কই মাছ ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। সিলভার কার্প ১১০-১২০ টাকা, পাবদা ৪৫০ টাকা, পাঙাস ১১০-১৩০, নলা ১২০-১৩০ টাকা এবং সরপুঁটি ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলে কি হবে। প্রথম রমজান আর শুক্রবার একসঙ্গে হওয়ায় বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি বেশি। তাই বেশি করে মাছ আনতে হয়েছে। আর পাইকারি আড়তে মাছের দাম বাড়তি। এ জন্য বেশি দামে এনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
রাজধানীর প্রত্যেকটি বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। কাওরান বাজারের চিকেন মার্কেটের বিক্রিতারা বলছেন, কাপ্তান বাজার থেকে বেশি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে মুরগি বিক্র করতে হচ্ছে।
এদিকে রাজধানীর রামপুরা বাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) রাজধানীতে মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছে না বিক্রেতারা। এসব বাজারের প্রত্যেকটি মাংসের দোকানে গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৭০-৫০০ টাকা, যা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল ৪৫০ টাকা। খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৭০-৭৮০ টাকা, যা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭২০।
খবর ৭১/ইঃ