রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁ জেলার রাণীনগরে এই প্রথম পরীক্ষা মূলক ভাবে চাষ করা হচ্ছে দামী মসলা জাতীয় ফসল কালিজিরার। ব্যায়বহুল এই মসলা জাতীয় সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে উপজেলার কৃষকদের। এই কালিজিরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। কালিজিরা শুধু মসলা জাতীয় ফসল নয়, সব রোগের ঔষধ হিসেবে খ্যাত কালিজিরা। চলতি রবি মৌসুমে উপজেলার চকমনু গ্রামে পরীক্ষা মূলক চাষ করেছেন সফল কৃষক মো: লিটন খন্দকার।
উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের চকমনু গ্রামের খন্দকার মো: নাজিম উদ্দিনের ছেলে সফল চাষী মো: লিটন খন্দকার বলেন, নিয়মিত ফসল চাষের একঘেয়েমী থেকে পরিবর্তন আনার জন্যই মূলত তিনি এই ঔষধী মসলা জাতীয় ফসল চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কম খরচে বেশি লাভের আশায় উপজেলায় তিনিই প্রথম এই ফসলের চাষ শুরু করেছেন। তিনি আশা করেন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কাটা-মাড়াই শেষ করে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন এই দামী ফসল। তিনি পরীক্ষামূলক ভাবে চলতি মৌসুমে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে এই কালিজিরার চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় তিনি এই কালিজিরা চাষে সফল হয়েছেন বলে জানান।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালিজিরা ফসল হিসেবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর চাষাবাদ নেই বললেই চলে। আয়ুর্বেদী, ইউনানি ও কবিরাজি চিকিৎসায় কালিজিরা ও কালিজিরার তেল ব্যাপক ব্যবহারের প্রচলিত আছে। আদিকাল থেকে ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস ও ক্যারোটিন সমৃদ্ধ কালিজিরা বিভিন্ন রোগের মহা ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অগ্রহায়ণ মাসের শেষের দিকে কালিজিরা বীজ বপন করতে হয় এবং তিন মাসের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। সমতল, বেলে, দোঁ-আশ মাটিতে কালিজিরা ভাল হয়। চাষ, বীজ, সার ও পানি বাবদ বিঘা প্রতি ৩ হাজার টাকার মতো খরচ হয়, ফলন হয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ মণ। বর্তমানে ১ মণ কালিজিরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯ হাজার টাকায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এসএম গোলাম সারওয়ার বলেন, জেলায় প্রথম রাণীনগর উপজেলায় চাষ করা শুরু হয়েছে কালিজিরার। আর এই কালিজিরা চাষে সফল একজন কৃষক লিটন। তার এই কালিজিরা চাষ এলাকায় ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি করেছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও উৎসাহে তিনিই প্রথম এই কালিজিরার চাষ শুরু করেছেন। যদিও এই ফসলটি চরাঞ্চলে বেশি হয়, তারপরও এই এলাকার কালিজিরা চাষ করা সম্ভব। স্থানীয় কৃষকরা আগামীতে তার দেখে এই ফসল চাষে আগ্রহী হবেন। সব মিলে ভাল দাম পেলে ধানের মতই এই ফসলের চাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি জানান।
খবর ৭১/ইঃ